ছুটির দুপুরে দাউদাউ আগুন, আতঙ্ক

বন্ধ কারখানায় আগুন লাগল রবিবার দুপুরে। বেলেঘাটার বিক্রয়কর অফিসের কাছে চুনাপট্টিতে ওই অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দু’দফায় ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের মোট ১৮টি ইঞ্জিন। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে ছুটির দিন না হলে এই আগুনে বড়সড় বিপদ হতে পারত বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলেঘাটা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৪
Share:

তখনও চলছে লড়াই। রবিবার, বেলেঘাটায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

বন্ধ কারখানায় আগুন লাগল রবিবার দুপুরে। বেলেঘাটার বিক্রয়কর অফিসের কাছে চুনাপট্টিতে ওই অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে দু’দফায় ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের মোট ১৮টি ইঞ্জিন। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে ছুটির দিন না হলে এই আগুনে বড়সড় বিপদ হতে পারত বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।

Advertisement

শিয়ালদহ দক্ষিণ রোডের ওই এলাকায় প্রায় ১০-১২টি কারখানার চারপাশে একাধিক বহুতলও রয়েছে। পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, রবিবার বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ হঠাৎই স্থানীয় মানুষ দেখেন, টিনের কৌটোর একটি কারখানার টালির চাল থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, খবর দেওয়ার আধ ঘণ্টা পরে দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ততক্ষণে আশপাশের কারখানাগুলিতেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।

একের পর এক কারখানায় আগুন ছড়িয়ে পড়তে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন আশপাশের বহুতলের বাসিন্দারা। কারখানাগুলির গা-ঘেঁষে থাকা বেশ কিছু বহুতলের জানলার ফ্রেম ও পাইপ আগুনের তাপে বেঁকে যায়। সেই সব ফ্ল্যাটে গলগলিয়ে ধোঁয়া ঢুকতে শুরু করে। ভয়ে অনেকেই ফ্ল্যাট ছেড়ে রাস্তাতেও নেমে আসেন।

Advertisement

এমনই এক ফ্ল্যাটের বাসিন্দা অমর গুপ্ত। দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে সবে ঘরে ঢুকেছিলেন। হঠাৎই দেখেন, জানলার বাইরে থেকে গলগলিয়ে ধোঁয়া ঢুকছে ঘরে। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের লোকেদের নিয়ে বহুতলের ছাদে উঠে যান তিনি। ততক্ষণে ভয়ে ছাদে উঠে গিয়েছেন বহুতলের অনেকেই। স্থানীয় বাসিন্দা রানা ঘোষ, দীপাঞ্জন দেবের কথায়, ‘‘দমকল আসতে দেরি করায় আমরা নিজেরাই চারদিক থেকে জল ছেটাতে শুরু করি। কিন্তু দু’একটি কারখানায় দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে।’’

তবে দমকল দেরিতে যাওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি দফতরের আধিকারিক গৌরপ্রসাদ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘খবর পাওয়া মাত্রই দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে কারখানাগুলির মধ্যে কোনও অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা দেখতে পাওয়া যায়নি।’’ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরে এ নিয়ে অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন টিনের কৌটোর কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়ে যায় লাগোয়া ছাতার বাঁট তৈরির কারখানা, এমনকী একটি চুনের গুদামেও। দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, এর ফলে খুব তাড়াতাড়ি ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। দমকলের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষও দ্রুত কারখানাগুলি থেকে জিনিসপত্র বার করে আনার কাজে হাত লাগান। সেই কাজ করতে গিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়েন কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে নীচ থেকে জল দেওয়ার পাশাপাশি সংলগ্ন বহুতলগুলির ছাদে উঠেও জল ছুড়তে শুরু করে দমকল। প্রথমে ১৫টি ইঞ্জিন এলেও পরে আরও তিনটি ইঞ্জিন আসে। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক পরে দমকলের ১৮টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

অন্য দিকে, এ দিনই দুপুরে বিধাননগর দক্ষিণ থানা এলাকার একটি শপিং মলের পিছনে ঝুপড়িতে হঠাৎই আগুন লাগে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এই ঘটনাতেও কোনও হতাহতের খবর মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন