এলাকা ভিত্তিক সম্পত্তিকর আদায় পদ্ধতি সরল করার নির্দেশ দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।—ফাইল চিত্র।
বছরখানেক আগে কলকাতায় চালু হয়েছে এলাকা ভিত্তিক সম্পত্তিকর আদায় (ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট) পদ্ধতি। তার জটিলতা নিয়ে করদাতাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ ছিলই। তা জানানো হয়েছিল পুর কর্তাদের। কিন্তু, অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। এ বার ওই পদ্ধতি আরও সরল করার নির্দেশ দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বুধবার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। প্রসঙ্গত, অতীনবাবু ডেপুটি মেয়র হওয়ার পরে কর মূল্যায়ন দফতরের দায়িত্ব তাঁকেই দিয়েছেন ফিরহাদ। অতীনবাবু জানান, এখনও অনেকের কাছেই ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট বোধগম্য হয়নি। ফলে প্রায় ৭ লক্ষ করদাতার মধ্যে ১৪ শতাংশ বাসিন্দাও এর জন্য আবেদন জানাননি। পাশাপাশি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিকরের পরিমাণও বেশি বলে অভিযোগ উঠেছে নানা মহল থেকে। ডেপুটি মেয়রের কথায়, ‘‘দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাইয়ের মতো দেশের অন্য মেট্রোপলিটন শহরগুলিতে বাণিজ্যিক কর-কাঠামো দেখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে কলকাতাতেও কর-কাঠামোয় কিছু রদবদল হতে পারে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমানে কলকাতায় সুদ ও আসল মিলিয়ে বকেয়া সম্পত্তিকরের পরিমাণ প্রায় ৪৭০০ কোটি টাকা। এর সিংহভাগ অংশ বড় ব্যবসায়ী ও উচ্চবিত্তদের। পুর প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে সব করদাতার ৫০ হাজার বা তার বেশি টাকা কর বাকি, তাঁদের তালিকা তৈরি করা হবে। কর মূল্যায়ন দফতর সূত্রের খবর, অনেক ক্ষেত্রে বহুতলে কর আদায়ে গিয়েও ঢুকতে দেওয়া হয়নি পুরকর্মীদের।
অতীনবাবু জানান, বকেয়া সম্পত্তিকর মেটানোর জন্য করদাতাদের অনুরোধ জানানো হবে। পাঠানো হবে চিঠি। প্রয়োজনে তিনি নিজে তাঁদের কাছে যাবেন। ডেপুটি মেয়রের কথায়, বকেয়া কর আদায় প্রধান লক্ষ্য পুরসভার। তাতে লাগাতার তাগাদা দেওয়া হবে। তার পরেও সংশ্লিষ্ট করদাতা বিষয়টি গ্রাহ্য না করলে পুর আইন অনুসারে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হচ্ছে।
একই সঙ্গে অতীনবাবু জানান, অনেক করদাতা সংসারে অভাবের কারণে কর মেটাতে পারছেন না। তাঁদের ক্ষেত্রে সুদের উপরে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ মকুব করার ক্ষমতা রয়েছে পুর প্রশাসনের। তাঁদের সেই সুযোগ নেওয়ার সুবিধা দিতে চায় পুরসভা।