এই বস্তাই উদ্ধার হয়েছে ধৃতদের কাছ থেকে।—নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক আগে কলকাতা স্টেশন থেকে মিলেছিল বিদেশি মাদক। এ বার বাজেয়াপ্ত করা হল তেজষ্ক্রিয় ধাতু ‘ইউরেনিয়াম’। এই বিপজ্জনক ধাতু পাচারের অভিযোগে বুধবার রাতে ম্যাঙ্গো লেন থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখা। ধৃতদের নাম জাভেদ মিয়াঁদাদ, শেখ মুঘল, মহম্মদ শাহজাহান মণ্ডল, ইউনুস বিশ্বাস, বসন্ত সিংহ। জাভেদের বাড়ি বীরভূমের নানুরে, মুঘলের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটায়, শাহজাহানের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায় এবং ইউনুস ও বসন্তের বাড়ি বহরমপুরে।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হওয়া একটি প্যাকেটের গায়ে ইউরেনিয়াম লেখা রয়েছে। ধৃতেরাও জানিয়েছে, ওটা ইউরেনিয়াম। দাম তিন কোটি টাকা। তবে এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ওই ধাতু ইউরেনিয়াম কি না, তা জানার জন্য ফরেন্সিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তারা রিপোর্ট দিলে তবেই চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে।’’ বৃহস্পতিবার পাঁচ জনকে আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, ম্যাঙ্গো লেনে পাঁচ সন্দেহভাজন যুবক ঘোরাফেরা করছে বলে খবর মেলে। গোয়েন্দা দল তাদের ঘিরে ফেলে। প্রথমে তাদের কাছে কিছু নথি মেলে। পরে ওই প্যাকেট উদ্ধার হয়। লালবাজারের সূত্র জানাচ্ছে, ওই নথির মধ্যে বন দফতরের লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের পদে চাকরির নিয়োগপত্র এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও রয়েছে। পুলিশের সন্দেহ, ওই সব নথি ভুয়ো। ফলে ইউরেনিয়াম লেখা ওই প্যাকেটে তেজষ্ক্রিয় রাসায়নিক রয়েছে কি না, তা নিয়েও ধন্দ আছে। পুলিশেরই একাংশের মতে, অনেক সময়েই নানা দামি জিনিস বিক্রির ছলে লোককে বোকা বানিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।
আরও পড়ুন
চারতলার সিঁড়ি থেকে পড়ে মৃত বৃদ্ধা, ধোঁয়াশা
আরও পড়ুন
ছাত্রী-শিক্ষক ‘ঘনিষ্ঠ’ ছবি ভাইরাল, নিউটাউনের স্কুলে ধুন্ধুমার
ধৃত পাঁচ।—নিজস্ব চিত্র।
বিজ্ঞানীরা জানান, ইউরেনিয়াম তেজষ্ক্রিয় ধাতু। এর ব্যবহার মূলত সামরিক ক্ষেত্রে। এ দেশে পরমাণু শক্তি তৈরিতে এই ধাতু ব্যবহার হয়। পরমাণু শক্তি চালিত ডুবোজাহাজে এর ব্যবহার আছে। তবে এই ধাতু দিয়ে পরমাণু বোমা তৈরি করাও সম্ভব। কোনও এলাকায় তেজষ্ক্রিয়তা ছড়িয়ে নাশকতা ঘটানোও অসম্ভব নয়। বাজেয়াপ্ত হওয়া প্যাকেটে ইউরেনিয়াম থাকলে তা যথেষ্ট চিন্তার কারণ। তবে এক পরমাণু বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘ইউরেনিয়াম প্যাকেটে নিয়ে ঘোরা সম্ভব নয়। তা হলে তেজষ্ক্রিয়তার প্রভাবে ধৃতেরাই অসুস্থ হয়ে প়ড়ত।