আরও আরও আরও...প্রাণ নয়, খাবারের স্টল— কলকাতা মেট্রো রেলে।
হরেক কিসিমের মোমো মিলছে ১১টি স্টেশনে। ইতিমধ্যেই দু’টি স্টেশনে খুলেছে কাটলেট-স্যান্ডউইচ-সিঙাড়া-চপ এবং চা-কফি-কেক-বিস্কুটের বিপণির চেন। ন’টি স্টেশনে রয়েছে নরম পানীয়ের স্টল, দু’জায়গায় আইসক্রিমের। দু’টি স্টেশনে আবার স্টল বসাচ্ছে দুনিয়া জুড়ে ব্যবসা করা পিৎ়জার বিপণি-চেন। নতুন স্টল খুলতে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বার্গার বিপণি চেন, পিৎজা বিক্রির আরও একটি চেন এবং কেক-পেস্ট্রি-প্যাটি বিক্রির সংস্থা।
প্রতি স্টেশনে খাবার স্টলের এতই ছড়াছড়ি যে কলকাতার মেট্রো রেল সফরের শুরু ও শেষে এখন কিছু না কিছু খাবার ও পানীয় মিলবেই। তবে রসনাসুখ ও পিপাসা মেটানোর বিষয়টি যাত্রীদের হলেও এই খাবারের স্টল কিন্তু তৃপ্তি দিচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষকেও। মেট্রো রেলের এক শীর্ষকর্তা জানান, ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরে মেট্রো রেল যেখানে স্টল বা কিয়স্ক ভাড়া দিয়ে সাত লক্ষ টাকা আয় করেছিল, সেখানে ২০১৫-’১৬য় আয় হয়েছে ৩০ লক্ষ। অর্থাৎ এক বছরে ২৩ লক্ষ টাকা আয় বৃদ্ধি! মেট্রোয় এখন খাদ্য-পানীয় বিক্রির কিয়স্ক ৩২টি।
মেট্রো সূত্রে খবর, সংস্থাগুলিকে তিন বছরের লাইসেন্স দেওয়া হয়। কিয়স্কের আয়তন অনুযায়ী বার্ষিক ভাড়া ৬০ হাজার থেকে আড়াই লক্ষ। ট্রেন আসার আগে এ সব স্টল থেকেই টুকটাক মুখ চালানো অথবা বাড়ি বা অফিসের জন্য প্যাকেটে খাবার মুড়ে নিচ্ছেন যাত্রীরা। আর টাকার মুখ দেখছে মেট্রো!
তবে মেট্রোর গোটা পথ অর্থাৎ কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া যেতে সময় লাগে সাকুল্যে ৫৫ মিনিট। আর দু’টি ট্রেনের মধ্যে ন্যূনতম সময়ের ব্যবধান মাত্র পাঁচ মিনিট। অর্থাৎ, ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার সময়ে রসিয়ে খাওয়ার বিলাসিতা সম্ভব নয়। ঠান্ডা পানীয় বা গরম কফির গ্লাসে আয়েশ করে কয়েক চুমুক দিতে না দিতেই প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকার সময় হয়ে যায়। আবার গোটা পথ যেতেও এত সময় লাগে না
যে কিছু খেতেই হবে। মেট্রো রেলের কর্তারাও এ সব স্বীকার করেছেন। কিন্তু তার পরেও কী ভাবে খাবারের স্টল থেকে এতটা আয় বাড়ল?
এক কর্তার ব্যাখ্যা, একেই জীবনযাপনে গতি বেড়েছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মেট্রোয় দু’টো ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কমেছে। এই অবস্থায় স্টেশনে কেউ বহুক্ষণ সময় কাটাবেন, ভাবাই যায় না। ‘‘তবে জীবনযাপনের গতি বেড়ে গিয়ে মেট্রোর খাবারের স্টলের উপযোগিতা বাড়িয়েছে। অফিস যাওয়ার আগে টিফিনের জন্য সহজেই কোনও স্টল থেকে স্যান্ডউইচ বা হট ডগ তুলে ট্রেনে উঠে পড়ছেন অনেকে। কেউ আবার অফিস থেকে ফেরার
পথে স্টেশনে নেমে থেকে রাতের খাবার হিসেবে কিনছেন মোমো’’— বলছেন ওই কর্তা।