ফুটপাথ বেদখল, পথচারী তাই রাস্তায়

দু’দিকে সার দিয়ে অটো দাঁড়িয়ে। কাছেই রাস্তার মোড়ে রয়েছে একটি রিকশা স্ট্যান্ডও। রাস্তার বেশ খানিকটা নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গোটা পঞ্চাশ রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। তার উপরে ফুটপাথে সার দিয়ে দোকান।

Advertisement

দেবাশিস দাস

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৬ ০৭:১৬
Share:

ফুটপাথে দোকান, রাস্তাই ভরসা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

দু’দিকে সার দিয়ে অটো দাঁড়িয়ে। কাছেই রাস্তার মোড়ে রয়েছে একটি রিকশা স্ট্যান্ডও। রাস্তার বেশ খানিকটা নিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গোটা পঞ্চাশ রিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। তার উপরে ফুটপাথে সার দিয়ে দোকান। কোথাও কোথাও আবার রাস্তার উপরেই পসরা সাজিয়ে বিক্রেতারা বসেন। রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে চলে কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া। বাধ্য হয়ে পথচারীদের রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হয়। দক্ষিণ শহরতলির অন্যতম ব্যস্ত রানিকুঠির মোড়ের এটা রোজকার চিত্র।

Advertisement

বাসিন্দা এবং পথচারীদের অভিযোগ, দিনের ব্যস্ত সময়ে এই রাস্তা দিয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয়। এই মোড়ের কাছেই রয়েছে একটি ইংরেজিমাধ্যম স্কুল। রয়েছে টেলিফোন এক্সচেঞ্জ। বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, রাস্তার দখলদারির জন্য প্রতি দিন স্কুল শুরু এবং ছুটির সময়ে দীর্ঘ ক্ষণ যানজটে আটকে থাকতে হয়। পড়ুয়াদেরও বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করতে হয়। পরিস্থিতি সামলাতে কালঘাম ছুটে যায় ট্র্যাফিক পুলিশেরও।

গড়িয়া মোড়ের পরে এই রানিকুঠির মোড়ই সরাসরি এনএসসি বসু রোডের সঙ্গে রাজা এসসি মল্লিক রোডের যোগাযোগ রক্ষা করছে। এই মোড় দিয়েই আনোয়ার শাহ রোড-ইএম বাইপাস সংযোগকারী রাস্তা হয়ে বাইপাসে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। আবার এই রানিকুঠির মোড় দিয়েই খুব কম সময়ে টালিগঞ্জ বা নেতাজি (কুঁদঘাট) মেট্রো স্টেশনে যাওয়া যায়। ফলে গত কয়েক বছরে এই রাস্তায় গাড়ির চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। এলাকার বাসিন্দা রাজীব বসু বলেন, ‘‘আগে এই রাস্তা দিয়ে সহজে যাতায়াত করা যেত। কিন্তু এখন পার হতে গেলে অনেক ক্ষণ দাঁড়িয়ে
থাকতে হয়।’’

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাম আমলে রানিকুঠি মোড় থেকে দখলদারি সরিয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের রানিকুঠি পুকুর সংলগ্ন একটি জমিতে সুপার মার্কেট তৈরি করে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল। সেই মার্কেটে এখন পুরোদমে বিকিকিনি চলছে। তার পরে বেশ কয়েক বছর রাস্তার দু’ধার ফাঁকা থাকলেও ধীরে ধীরে ফের ওই রাস্তা ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ।

৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের সময়ে রানিকুঠির মোড় থেকে ব্যবসায়ীদের সরিয়ে পুনর্বাসন দিয়ে ওই রাস্তা চওড়া করা হয়েছিল। এলাকার মানুষ তার সুফলও ভোগ করেছিলেন। ফের সেই রাস্তা দখল হয়ে গিয়েছে।’’ ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান এবং ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘রানিকুঠির মোড়ের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। এই সমস্যা আমাদের নজরেও এসেছে। বিষয়টি নিয়ে টালিগঞ্জের বিধায়ক এবং রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই রাস্তা দিয়ে পথচারীরা যাতে স্বচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হবে।’’

কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাস্তার দখলদারি সরানো আমাদের কাজ নয়। এটি পুরসভার আওতায়। ওই কাজ করার সময় পুরসভা সাহায্যের আবেদন করলে আমরা সহযোগিতা করতে পারি।’’ পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘সমস্যাটি নজরে রয়েছে। আমরা সমাধানের জন্য পরিকল্পনা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন