কলকাতায় ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় মারা গেলেন কানয়াপাক প্রোনমাচোত। আর মৃত্যুর পরে তাইল্যান্ডের বাসিন্দা, ৪১ বছরের ওই মহিলার দেহ শহরের এক হাসপাতালে রেখে দেওয়া হল ৩৬ ঘণ্টারও বেশি। রবিবার রাতে মৃত্যুর পরে সোমবার সারা দিন কেটে গেল তাঁর দেহের ময়না-তদন্ত করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে। ঠিক হয়েছে, মঙ্গলবার ময়না-তদন্তের পরে প্রোনমার দেহ তুলে দেওয়া হবে তাঁর ছেলের হাতে। তার পরে দেহ নিয়ে ছেলের ব্যাঙ্কক রওনা হওয়ার কথা।
গত ১১ অগস্ট রাতে দিল্লি থেকে ব্যাঙ্কক যাওয়ার পথে মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রোনমা। তাঁকে নিয়ে বিমান নেমে আসে কলকাতায়। সেই রাতেই কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে এক বেসরকারি হাসপাতালে অচৈতন্য অবস্থায় ভর্তি করা হয় তাঁকে। প্রোনমার জ্ঞান আর ফেরেনি। রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি মারা যান। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত শুক্রবার থেকেই মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল ওই মহিলার।
প্রোনমা যেহেতু অচৈতন্য অবস্থায় ভর্তি হয়ে মারা গিয়েছেন, মাঝে এক বারও তাঁর জ্ঞান ফেরেনি, তাই নিয়ম অনুযায়ী তাঁর দেহের ময়না-তদন্তের জন্য হাসপাতালের তরফে বলা হয়েছে। বিষয়টি বাগুইআটি থানাতেও জানানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রোনমার ছেলে শুক্রবার কলকাতায় এসেছেন। ময়না-তদন্তে তাঁর আপত্তি ছিল। এমনকি, তাই দূতাবাসও আপত্তি জানায়। কিন্তু নিয়ম মেনে প্রোনমার দেহ ময়না-তদন্তের পরেই ছেলের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রোনমার সঙ্গে সে দিন উড়ানে এক বন্ধু ছিলেন। ২৮ বছরের সেই অমর বিঘানের বাড়ি মুম্বইয়ে। প্রোনমার সঙ্গে তাঁকেও কলকাতায় নামিয়ে দেওয়া হয়। তিনি মাঝেমধ্যেই হাসপাতালে গিয়ে প্রোনমাকে দেখে আসতেন। এমনকি, প্রোনমার হাতের আংটিও তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসার খরচ তিনি দেননি।
প্রোনমার চিকিৎসার খরচ কে জোগাবে, তা নিয়ে ধন্দে পড়ে যান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাধারণত, কোনও বিদেশি এ ভাবে শহরের হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁর চিকিৎসার খরচ সেই দেশের দূতাবাসই দেয়। এ ক্ষেত্রেও কলকাতার তাই দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রোনমার ছেলের সঙ্গেও যোগাযোগ করে হাসপাতাল। কিন্তু তিনিও চিকিৎসার খরচ দিতে অস্বীকার করেন। প্রোনমার পরীক্ষার জন্য যে ‘কনসেন্ট ফর্ম’ পূরণ করে জমা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা তাঁর ছেলে ই-মেলে পাঠিয়ে দেন।
গত শুক্রবার দূতাবাসের পক্ষ থেকে হাসপাতালকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। আরও দু’লক্ষ টাকার মতো বকেয়া রয়েছে। সেই টাকাও দিতে রাজি হয়েছে তাই দূতাবাস।