চিঠি দিয়ে বন দফতরের প্রশ্ন, কার অনুমতিতে কাটা হল ৩৯টি গাছ? অস্বস্তিকর এই পরিস্থিতির পিছনে ‘প্রভাবশালী ব্যক্তি’র হাত দেখছেন বিধান শিশু উদ্যান কর্তৃপক্ষ।
উল্টোডাঙার এই শিশু উদ্যানে ৬৪ বিঘা জমিতে প্রচুর গাছ আছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডু মানিকতলা থানায় অভিযোগ করেন, উদ্যান কর্তৃপক্ষ বেআইনি ভাবে একাধিক গাছ কেটেছেন। এর পরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আর্জি জানিয়ে ৭ নভেম্বর বন দফতরকে চিঠি দেয় মানিকতলা থানা। চিঠির ভিত্তিতে গত সোমবার বন দফতরের আধিকারিকেরা শিশু উদ্যান পরিদর্শন করেন। এ দিন ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার উৎপল নাগ জানান, পরিদর্শন শেষে রিপোর্টের ভিত্তিতে উদ্যান কর্তৃপক্ষকে এক সপ্তাহের মধ্যে বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে।
বন দফতর সূত্রের খবর, নোটিসে বলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী, বনাঞ্চল নয় এমন এলাকায় গাছ কাটতে হলে অনুমতি বাধ্যতামূলক। উদ্যান কর্তৃপক্ষ তা নেননি। যার প্রেক্ষিতে সেগুন, শিশু, বাঁশ, ইউক্যালিপ্টাস, শিমূল-সহ একাধিক গাছ কেন কাটা হল, কর্তৃপক্ষের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। শনিবার এ প্রসঙ্গে উদ্যান কর্তৃপক্ষ জানান, এপ্রিলের ঝড়ে অন্তত আটটি গাছ ভেঙে পড়েছিল। সেগুলি আরও কিছু গাছের উপরে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় অন্য গাছও। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শ্রমিক পেতে দেরির কারণে এত দিন সরানো যায়নি।
বন দফতর সূত্রের খবর, ঝড়ে কিছু গাছ পড়েছে ঠিকই। তবে কিছু গাছে কুড়ুলের কোপের চিহ্ন রয়েছে। উদ্যান কমিটির সম্পাদক গৌতম তালুকদারের যুক্তি, ‘‘যে সংস্থা গাছ কাটছিল, তার কর্মীরা কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কিছু গাছ কেটেছেন। এ ক্ষেত্রে নজরদারির অভাব ছিল। কিন্তু যে ভাবে ঘটনাটি দেখানো হচ্ছে তা ঠিক নয়।’’ এখানেই প্রভাবশালী ব্যক্তির হাত দেখছেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির কন্যা উদ্যান কমিটির ব্যাঙ্কোয়েট হল পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় ওই ব্যক্তি নানা ভাবে বিরক্ত করছেন।’’ শান্তিরঞ্জন বলেন, ‘‘স্থানীয়দের থেকে বার্তা পেয়ে পদক্ষেপ করেছিলাম। বন দফতর অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।’’