ছবি: সংগৃহীত
হেলে পড়া গাছগুলি থেকে মাঝেমধ্যেই ভেঙে পড়ে ডাল। তাতে অনেকে আহত হন বলেও অভিযোগ রবীন্দ্র সরোবরে আসা প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশের। কিন্তু গরমের আগে আদৌ সেই গাছগুলি কেটে ফেলা হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েই গিয়েছে।
নিয়মানুযায়ী, শহরের কোনও গাছ কাটতে গেলে কলকাতা পুরসভা ছাড়াও বন দফতরের অনুমতি লাগে। তবে রবীন্দ্র সরোবরের হেলে যাওয়া গাছগুলি সম্পর্কে পুরসভা বন দফতরের কাছে চিঠি পাঠালেও এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর মেলেনি। ফলে লাল ফিতের গেরোয় আটকে গিয়েছে গাছ কাটার কাজ। রবীন্দ্র সরোবরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ আধিকারিক সুধীন নন্দীর কথায়, ‘‘গাছ পড়ে বা ডাল ভেঙে যাতে কেউ আহত না হন, সে কারণে নিয়ম মেনেই কাজ করছি। কয়েকটি গাছ বাঁচাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেগুলি ভাল আছে। কিন্তু যেগুলিকে কোনও ভাবেই রাখা সম্ভব হচ্ছে না, জনগণের স্বার্থে তাদের কাটাতে হবে।’’
নিয়মানুযায়ী বন দফতর থেকে গাছ কাটার সবুজ সঙ্কেত পেলে তবেই ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনকে জানাবে কেএমডিএ। ওই সংস্থা গাছ কেটে বিক্রি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেএমডিএ-কে বরাদ্দ করবে। কেএমডিএ সূত্রের দাবি, গরমে কালবৈশাখীর সময়ে শহরে বারবার গাছ পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। সেই কথা মাথায় রেখেই বন দফতরকে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও উত্তর মেলেনি।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সরোবরে কয়েকটি গাছের করুণ অবস্থা নিয়ে পুরসভাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিল কেএমডিএ। তার ভিত্তিতেই পুরসভার উদ্যান দফতর সেই গাছগুলি দেখে কেএমডিএ-র কাছে রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্ট বলছে, রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে থাকা মোট ৬টি গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাঝেমধ্যেই ওই গাছগুলি থেকে শুকনো ডাল ভেঙে পড়ছে। রবীন্দ্র সরোবর রক্ষণাবক্ষণের জন্য কলকাতা হাইকোর্ট মনোনীত সদস্য সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,‘‘ নষ্ট হয়ে যাওয়া গাছ কেটে ফেলাই উচিত। কারণ, এই গাছের ডাল ভেঙে ইতিমধ্যেই জখম হচ্ছেন অনেকে। তার পরে কালবৈশাখী তো রয়েছেই। তবে পরিবেশবিদদেরও এই ব্যাপারে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।’’
বছর দু’য়েক আগে গাছ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করে রবীন্দ্র সরোবরের
গাছেদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়েছিল কেএমডিএ। তখনই দেখা যায়, সরোবর চত্বরে প্রায় ১৫ টি গাছ পোকা লেগে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওষুধ দিয়ে তাদের মধ্যে বেশির ভাগ গাছকে বাঁচানো হেলেও হাকি ৬টি গাছকে কোনও ভাবেই বাঁচানো যাবে না বলে দাবি কেএমডিএ-র। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নষ্ট হয়ে যাওয়া ওই গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশবিদদের একাংশ সে সময়ে বাধা দেওয়ায় তাঁরা পিছিয়ে এসেছিলেন।