গাড়ি-ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার

সহজ কিস্তিতে গাড়ির ঋণ পাইয়ে দেওয়ার একটি আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্রের সন্ধান পেল পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩১
Share:

সহজ কিস্তিতে গাড়ির ঋণ পাইয়ে দেওয়ার একটি আন্তঃরাজ্য প্রতারণা চক্রের সন্ধান পেল পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই চক্রের এক সদস্যকে শুক্রবার মানিকতলা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম বিবেকানন্দ মিশ্র। ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ওই যুবক গত সাত মাস ধরে বাইপাসের ধারে পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। তাকে জেরা করেই চক্রের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। শনিবার ধৃতকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে মানিকতলা থানা এলাকার বাসিন্দা স্বপন জানা সল্টলেকের একটি বহুজাতিক গাড়ির শোরুমে যোগাযোগ করেন মালবাহী একটি গাড়ি কেনার জন্য। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয় ঋণের মাধ্যমে ওই গাড়ি কেনা হবে। সেই মতো গাড়ির বিক্রেতাদের চেকে প্রায় এক লক্ষ টাকা দেন স্বপনবাবু। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেন, জানুয়ারির শেষ দিন ওই গাড়ি কিনতে সল্টলেক গিয়েছিলেন তিনি। সেদিনই তাঁর সব রকম নথি তুলে দেন শোরুমের কর্মীদের হাতে। এর পরের দিনই তিনি একটি ফোন পান। বলা হয় খুব সহজেই ওই গাড়ির ঋণ পাইয়ে দেওয়া হবে। পুলিশকে স্বপনবাবু জানান, বিবেকানন্দ নামে ওই ব্যক্তি সহজে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে স্বপনবাবু তার হাতে বিভিন্ন ব্যক্তিগত নথি, দফায় দফায় কয়েক হাজার টাকা এবং একটি ‘ব্ল্যাঙ্ক’ চেক দেন। এর কিছু দিন পরেই তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৯৫ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তখনই তাঁর সন্দেহ হয় বিবেকানন্দের উপর। বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন ধরেনি সে। পরে সে ফোন বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ। এর পরেই মানিকতলা থানায় অভিযোগ করেন স্বপনবাবু।

Advertisement

পুলিশের দাবি, গাড়ির ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি প্রতারণা চক্র তৈরি করেছিল বিবেকানন্দ। যার সঙ্গে একটি গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার শোরুমের কোনও কর্মীর যোগাযোগ রয়েছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘যে ভাবে গাড়ি কেনার আগ্রহ দেখানোর পরে প্রতারণা চক্রের কাছে অভিযোগকারীর নম্বর পৌছে গিয়েছে, তা গুরুতর বিষয়। বাকি সদস্যদের খোঁজ শুরু হয়েছে।’’ তদন্তকারীরা জানান, সাত মাস আগে কলকাতায় এসে সেক্টর ফাইভে একটি বিমা সংস্থায় চাকরির পাশাপাশি চক্রটি গড়ে তোলে ধৃত যুবক। তিনটি প্রতারণার ঘটনায় সে যুক্ত বলে দাবি পুলিশের।

পুলিশ জেনেছে, যে ঠিকানা দিয়ে বিবেকানন্দের মোবাইলের সিম কার্ড নেওয়া হয়েছিল সেটি ভুয়ো। পুলিশ জানতে পারে, স্বপনবাবুর চেকটি ভাঙানো হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের গিরিডির একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখায়। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি বিবেকানন্দের মায়ের। সেই সূত্রেই বিবেকানন্দের ভূমিকা জানা যায়। এর পরেই শুক্রবার অন্য একজনের ঋণ করে দিতে হবে বলে ডাকা হয় তাকে। পরে সেখানেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন