Durga Puja 2022

অসুরের মুখে কি গান্ধীর আদল, তুলকালাম শহরে

বাইপাসের রুবি পার্কের একটি মণ্ডপে অসুরের মূর্তিতে গান্ধীর মুখ রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সমাজমাধ্যমে সেই ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৫৭
Share:

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রেও জানা গিয়েছে, পুজোটি হিন্দু মহাসভার আয়োজিত। ছবি সংগৃহীত

দেবীপক্ষের সপ্তমী এবং জাতির জনক মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর ১৪৩ বছরের জন্মদিনে বাংলা তথা কলকাতা চরম কলঙ্কের মুহূর্তের সাক্ষী হল বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বাইপাসের রুবি পার্কের একটি মণ্ডপে অসুরের মূর্তিতে গান্ধীর মুখ রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সমাজমাধ্যমে সেই ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচি উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় থানায় এ নিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। দক্ষিণ শহরতলির সিপিএম নেতা চয়ন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তো রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরেরই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করা উচিত। পুলিশ-প্রশাসনকে অন্ধকারে রেখে দুর্গাপুজোর খোলা মণ্ডপে কী করে এত বড় স্পর্ধার কাজ সম্ভব হল তা নিয়েও নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। রাতে কসবা থানাও পুজোটির কর্মকর্তাদের নামে উস্কানিমূলক আচরণ এবং বিভেদ সৃষ্টির জন্য অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ ও সাধারণ মানুষের চাপের মুখে পুজো কর্তারা রাতেই অসুরের টাক মাথা, চশমাধারী মুখটিকে বদলে ফেলে বলে জানা গিয়েছে।

কৌস্তভ বলেন, অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা কসবা কানেক্টরে এই পুজোর আয়োজন করেছে। তাদের নেতা চন্দ্রচূড় গোস্বামী এবং অন্য কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যদিও প্রথমে টিটাগড় থানা এফআইআর নিচ্ছিল না বলে অভিযোগ তোলেন কৌস্তভ। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘আরএসএসের লোকজনেদের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের নিবিড় প্রেমের জন্য টিটাগড় থানা এফআইআর নিতে নিমরাজি।’’

Advertisement

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রেও জানা গিয়েছে, পুজোটি হিন্দু মহাসভার আয়োজিত। মণ্ডপের গায়ে লেখা ‘অখিল ভারতীয় হিন্দু পরিষদ’। পুলিশ জানায়, পুজোটির পুলিশি ছাড়পত্র নেই। সাধারণত পাঁচ বছরের কম দিনের পুজোকে আজকাল অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ। তবে অনুমতি না-পেলেও কসবা রুবি মোড়ের পুজোটির উদ্যোক্তারা গত ২৮ সেপ্টেম্বর কসবা থানায় পুজোর আর্জি জানান। শনিবার মণ্ডপ গড়ে হঠাৎ পুজো শুরু হয়ে যায়। এ দিন অসুরের মুখটি নিয়ে হইচই শুরুর পরে পুলিশ মাঠে নামে। তবে পুলিশের বক্তব্য, পুজো বন্ধ করা হবে না। উদ্যোক্তাদের অসুর বদলাতে বলা হয়েছে। অসুরের মাথায় চুল, গোঁফ-টোঁফ লাগিয়ে রাতেই মুখটা বদলে ফেলা হয় বলেও শোনা যাচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে রাজ্যের এক মন্ত্রীরও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।

গান্ধীর মত ও পথের সঙ্গে ঐতিহাসিক ভাবে ভিন্ন মেরুতে অবস্থান বলেই এমন অসুরের পরিকল্পনা বলে পুজোটির উদ্যোক্তারা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন। ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের কর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “এই পুজোটি আমাদের সদস্য নয়। আমাদের কোনও মৃৎশিল্পী, কখনওই এ কাজ করবে না। যা হয়েছে, তা উস্কানিমূলক।” তবে রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন