—প্রতীকী ছবি।
বেশ কায়দা করে হাল ফ্যাশনের চুলের ছাঁট দিয়ে স্কুলে এসেছিল সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র। অভিযোগ, তাকে স্কুলে ঢুকতে দেননি দ্বাররক্ষী। এর জেরে ওই ছাত্রের অভিভাবক এসে দ্বাররক্ষীকে বেধড়ক মারধর করেন বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল দশটা নাগাদ মধ্যমগ্রামের রোহন্ডা হাইস্কুলের এই ঘটনা এমনই পর্যায়ে পৌঁছয় যে, দুপুর একটা নাগাদ ছুটি দিয়ে দিতে হয় স্কুল। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
স্কুল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল দশটায় স্কুল খোলার পরে রোজকার মতোই এসে পৌঁছয় সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্র। তার চুলের ছাঁট দেখে দ্বাররক্ষী জানান, এ ভাবে স্কুলে ঢোকা যাবে না। ঠিক করে চুল কেটে আসতে হবে। তাই ওই ছাত্র বাড়ি ফিরে যায়। কিন্তু এর কিছু পরেই তার বাবা সুবীর আলি এসে ওই দ্বাররক্ষীকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। জখম দ্বাররক্ষীকে নিয়ে যেতে হয় মধ্যমগ্রাম হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
এই ঘ়টনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় ওই স্কুল চত্বরে। অভিযোগ, সুবীর আলি তাঁর দলবল নিয়ে চড়াও হয়েছিলেন স্কুলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ছুটি
দিয়ে দেওয়া হয় স্কুল। সুবীর আলি নামে ওই অভিভাবক অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও মারধর হয়নি। চুল যেমনই হোক, স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হবে না কেন? অভিভাবককে ডেকে বলতে পারতেন কর্তৃপক্ষ। আমার ছেলেকেও সতর্ক করা যেত।’’
তা হলে কি পোশাক পরিচ্ছদের ন্যূনতম বিধি-নিষেধও রাখা যাবে না স্কুলে?
ওই স্কুলের শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘‘কিছু দিন আগেই একটি বৈঠকে ঠিক করা হয়েছিল, ছাত্রছাত্রীদের ঠিক ভাবে পোশাক পরে, চুল আঁচড়ে স্কুলে আসতে হবে। এ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল তখনই। সে কথা মাথায় রেখেই ওই ছাত্রকে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন দ্বাররক্ষী। তাঁকে এ ভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি।’’
এই ঘটনায় শুনে অনেকেই বলছেন, স্কুল এমন একটি জায়গা, যেখানে পোশাক বা চুলের ছাঁট নিয়ে কিছু বিধি-নিষেধ থাকারই কথা। সেটাও শিক্ষার অঙ্গ বলেই মনে করেন তাঁরা। স্কুলের নিয়ম না মানলে ঢুকতে বাধা পাওয়াও স্বাভাবিক। নিয়ম মেনে চলতে বললে যদি অভিভাবকদের তরফেই প্রতিবাদ আসে, তাতে পড়ুয়াদেরই ক্ষতি হয় বলে মনে করেন শিক্ষা জগতের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞেরা। এ ক্ষেত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, গোলমালের পরে ‘ঠিক করেই’ চুল কেটে নিয়েছে ওই ছাত্র।