ঠেকে শিখেই এ বার ডেঙ্গি-যুদ্ধে বিধাননগর

ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি ধরা পড়েছে অনেকের (পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মানতে নারাজ)। জ্বরে তিন জনের মৃত্যুও হয়েছে। তবে বিধাননগর পুরসভায় এখনও সেই জ্বর ছড়ায়নি বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ০২:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেউ দেখে শেখে, কেউ ঠেকে।

Advertisement

বিধাননগর অবশ্য ঠেকে শিখছে। কিন্তু সেই শেখা তাদের সাফল্যের পথ দেখাবে কি না, তা পরিষ্কার হবে এ মাসেই। পাশের দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ছড়াচ্ছে জ্বর। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি ধরা পড়েছে অনেকের (পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মানতে নারাজ)। জ্বরে তিন জনের মৃত্যুও হয়েছে। তবে বিধাননগর পুরসভায় এখনও সেই জ্বর ছড়ায়নি বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। যদিও বাসিন্দারা বলছেন, না-আঁচালে বিশ্বাস নেই। পুর কর্তৃপক্ষের কথায় তাঁরা ভরসা রাখতে পারছেন না।

গত বছর বিধাননগর পুরসভা এলাকায় সরকারি ভাবে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০০। যদিও অসমর্থিত সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা এর দ্বিগুণ। অন্য দিকে, মৃতের সংখ্যা ছিল ২০। প্রশাসন থেকে বাসিন্দাদের তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে এ বছর শুরু থেকেই কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি বিধাননগর পুরসভার। তাই চলতি মাস পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত, বিশেষত ডেঙ্গির প্রকোপ এলাকায় দেখা যায়নি।

Advertisement

পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সব খালের সংস্কার, নালা-নর্দমা পরিষ্কারের কাজ হয়েছে নিয়মিত ভাবে। খালে জলের প্রবাহ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অফিস, থানা থেকে শুরু করে বসতবাড়িতে নোটিস পাঠানো, তথ্য সংগ্রহ ও সচেতনতার কাজে জোর দেওয়ার মাধ্যমে প্রস্তুতি সেরেছে পুরসভা। এখনও ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো জ্বরে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর নেই। তবে তাঁরা প্রস্তুতি রেখেছেন। মাতৃসদন এবং বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

যদিও পুরসভার দাবিতে তেমন ভরসা নেই বাসিন্দাদের। এবি ব্লকের এক বাসিন্দার মন্তব্য, ‘‘এ বছর এখনও কোনও পতঙ্গবিদ নিয়োগ করতে পারল না পুরসভা। রোগ নির্ণয়, রোগ প্রতিরোধে কলকাতা পুরসভার মতো স্বাবলম্বী হতে পারল না বিধাননগর। ভরসা থাকবে কী করে?’’

সল্টলেক এলাকায় এখন মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলছে। সেখানে বহু জায়গায় জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। বহু পার্ক বা রাস্তার ধারে সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। কিন্তু সেখানেও জল পাল্টানো হয় না। পাশাপাশি ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে বহু নির্মাণও স্থগিত রয়েছে। সেখানে জল জমলে, সরানোর কোনও প্রচেষ্টা দেখা যায়নি। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, বাড়ি বাড়ি ঢুকে জীবাণু চিহ্নিত করে তা ধ্বংস করা ও তথ্য সংগ্রহের কাজ তাঁরা সর্বত্র দেখতে পাচ্ছেন না।

সল্টলেকের ১৪টি ওয়ার্ডে এই ছবি ছাড়াও রাজারহাট-গোপালপুরের ২৭টি ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকাও পুরসভার অস্বস্তির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা। বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘গত বছর সবে পুরসভা গঠিত হয়েছিল।
ফলে প্রস্তুতির সময় মেলেনি। এ বছর শুরু থেকেই জোরকদমে কাজ হচ্ছে।’’

মেয়র সব্যসাচী দত্তের হুঁশিয়ারি, ‘‘কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ অভিযানে সাড়া না দিলে কড়া পদক্ষেপ করতে পিছপা হবে না পুরসভা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন