রক্ত দিলেই মিলছে উপহার, অভিযোগ বরাহনগরে

স্বাস্থ্য দফতরের কড়া নির্দেশিকাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রবিবার উপহারের বিনিময়ে রক্তদান শিবির আয়োজন করার অভিযোগ উঠল বরাহনগর আলমবাজারের একটি ক্লাবের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৯
Share:

উপহার নিয়ে বাড়ির পথে। রবিবার, বরাহনগরে। নিজস্ব চিত্র

শুধু রক্ত দেওয়ার অপেক্ষা! এর পরে শয্যাতেই রক্তদাতাদের হাতে চলে আসছে উপহারের কুপন। দাতাদের বুকের উপর ওই কুপন রেখে উদ্যোক্তারা সবিনয়ে বলছেন, ‘‘উপহার নিয়ে যেতে ভুলবেন না যেন! পরের বার আরও ভাল কিছু দেব।’’ ওই কুপন দেখিয়েই খাবার এবং উপহার হিসেবে টেবিল ফ্যান বগলে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন রক্তদাতারা।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের কড়া নির্দেশিকাকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রবিবার উপহারের বিনিময়ে রক্তদান শিবির আয়োজন করার অভিযোগ উঠল বরাহনগর আলমবাজারের একটি ক্লাবের বিরুদ্ধে। এ দিন সকাল ১০টা থেকে আলমবাজারের নবজ্যোতি সঙ্ঘের উদ্যোগে ওই রক্তদান কর্মসূচি শুরু হয়। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এ বারের শিবিরে রক্ত দিয়েছেন মোট ১,৭৫০ জন। রক্ত দেওয়ার পর সকলকেই উপহার হাতে বাড়ি পাঠিয়েছেন উদ্যোক্তারা। রক্তদানে উপহার কেন? প্রধান উদ্যোক্তা, ওই ক্লাবের সম্পাদক পুলক ঘোষের দাবি, ‘‘উপহার দিলে লোক বেশি হয়।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘উপহার দিলে সমস্যা কোথায়, তা-ই বুঝতে পারছি না!’’

এ দিনের রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এবং বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়। তাঁরা সকলেরই অবশ্য জানাচ্ছেন, তাঁদের ‘অন্ধকারে’ রেখেই ওই রক্তদান শিবিরে উপহার দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবুর কথায়, ‘‘জানতামই না। কথা বলে দেখছি। এটা ঠিক করেনি।’’ বিধায়ক তাপসবাবু বললেন, ‘‘বারবার ওদের বারণ করেছি। তবু শোনেনি! আমি যতক্ষণ ছিলাম কোনও উপহার দেয়নি। তবে কথা বলছি।’’ সৌগতবাবুও বলছেন, ‘‘একটা ক্লাব ডেকেছিল বলে গিয়েছিলাম। বলে দেব, নানা লোকে প্রশ্ন তুলছে, উপহার না দিতে।’’

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর উপহারের বিনিময়ে রক্তদান বন্ধ করতে বলছে বহু বারই। কারণ, উপহারের বিনিময়ে রক্তদানের ব্যবস্থা করলে বহু দাতা রোগ লুকিয়ে রক্তদান করেন বলে অভিযোগ। উপহারের কারণে শিবিরে দাতার সংখ্যাও প্রচুর হয়ে দাঁড়ায় বলে তাঁদের পরীক্ষাও ঠিক মতো করা যায় না বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। এসব শুনে অবশ্য পুলকবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘জানা রইল। পরের বার থেকে আর করব না।’’

তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বরাবরই উপহারের বিনিময়ে রক্তদানের আয়োজন করেন পুলকবাবুদের ওই ক্লাব। কিন্তু কী ভাবে তা আটকানো যায়, জানেন না কেউই। তাপসবাবু যেমন বললেন, ‘‘ওরা কারও কথাই শোনে না। দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন