বহুতলের ছাদ থেকে ‘ঝাঁপ’, মৃত্যু কিশোরীর

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ছ’তলা বাড়িতে লিফট রয়েছে। চারপাশ অন্ধকার। সিঁড়িতেও আলো নেই। ওই বাড়ির বেশির ভাগ ফ্ল্যাটই বন্ধ। বাইরে থেকে কড়া নেড়ে বা বেল বাজিয়েও আবাসিকদের সাড়া পাওয়া যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০০
Share:

বহুতলের নীচে এই জায়গাতেই পড়েছিল কিশোরী। বুধবার, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ে। নিজস্ব চিত্র

ছ’তলার ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক কিশোরীর। বুধবার সন্ধ্যায়, উত্তর কলকাতার যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ে।

Advertisement

জায়গাটি শোভাবাজার ও বিডন স্ট্রিটের মাঝখানে। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাড়ির পিছনের দিক থেকে ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ পেয়ে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে যান। বাড়ির পিছনে সিমেন্টের চাতাল রয়েছে। দেখা যায়, সেখানে ওই কিশোরী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পুলিশ গিয়ে বছর পনেরোর ওই কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কলকাতার একটি স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত সে। বাড়ি উত্তর কলকাতায়।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ছ’তলা বাড়িতে লিফট রয়েছে। চারপাশ অন্ধকার। সিঁড়িতেও আলো নেই। ওই বাড়ির বেশির ভাগ ফ্ল্যাটই বন্ধ। বাইরে থেকে কড়া নেড়ে বা বেল বাজিয়েও আবাসিকদের সাড়া পাওয়া যায়নি। শুধু এক মহিলা বাসিন্দা জানান, ওই কিশোরী এই বাড়ির বাসিন্দা ছিল না। সে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে ওই বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাটে বিজ্ঞানের টিউশন নিতে আসত।

Advertisement

তিনতলার সেই ফ্ল্যাটে বেল বাজালে এক মহিলা দরজা খুলে নিজের পরিচয় না দিয়ে জানান, কিশোরী তাঁদের বাড়িতে পড়তে আসত। তবে বুধবার সে আসত না। এ দিন ওই বাড়িতে এলেও কিশোরী তার গৃহশিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করেনি। প্রশ্ন ওঠে, ছাদে কী করে গেল সে? ছাদের দরজায় কি তালা লাগানো থাকত না? ওই ফ্ল্যাটবাড়ির অন্য এক বাসিন্দা জানান, সম্প্রতি বাড়িটিরি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। তাই ছাদের দরজা খোলাই ছিল।

আরও পডু়ন: ইচ্ছেমতো ‘বিচার’ সোশ্যাল মিডিয়ায়

ওই বাড়ির আশপাশে যে দোকানদারেরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেও এ দিন বিশেষ কিছু জানা যায়নি। খবর পেয়ে বড়তলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, তারা যখন দেহ উদ্ধার করে, তখন কিশোরীর মুঠোর ভিতরে ভাঁজ করা অবস্থায় একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ তাই মনে করছে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। ওই বাড়িতে কিশোরী নিয়মিত পড়তে যেত বলেই সে জানত, ছাদের দরজা ইদানীং খোলা রাখা হচ্ছে। রীতিমতো পরিকল্পনা করেই সে এ দিন বিকেলের পরে ওই বাড়িতে ঢোকে। সটান ছাদে চলে যায়। সেখান থেকে পিছনের সিমেন্টের চাতালে ঝাঁপ মারে।

পুলিশ দেহটি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন সেখানে পৌঁছন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে না পেরেই আত্মঘাতী হয়েছে ওই কিশোরী। গত কয়েক দিন ধরে সে মানসিক অবসাদেও ভুগছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন