আক্রান্ত এবিপি আনন্দ

হরিমোহনে সংঘর্ষ টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর

গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জি এস) পদের দখল নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ গড়াল পুলিশ পর্যন্ত। শনিবার ওই ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন এবিপি আনন্দ সংবাদ চ্যানেলের দুই সাংবাদিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫৭
Share:

গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জি এস) পদের দখল নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ গড়াল পুলিশ পর্যন্ত। শনিবার ওই ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন এবিপি আনন্দ সংবাদ চ্যানেলের দুই সাংবাদিক। এই নিয়ে তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেও রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বছর আড়াই আগে এই হরিমোহন কলেজে নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন দু’টি ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর তাপস চৌধুরী।

Advertisement

শনিবার ওই কলেজে ঠিক কী ঘটেছিল? পুলিশ সূত্রের খবর, গত জানুয়ারিতে হরিমোহন ঘোষ কলেজে ছাত্র সংসদ ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল টিএমসিপি। সে সময়ে টিএমসিপি-র ইস্তিহাক আলম আনসারি সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মাস খানেক আগে উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়িতে গিয়েছিলেন ইস্তিহাক। ফিরে এসে জানতে পারেন, তাঁকে সরিয়ে দিয়ে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পদে বসানো হয়েছে আসফাক আনসারিকে। ইস্তিহাকের অভিযোগ, ‘‘সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে আমাকে ছাত্র সংসদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাকে না জানিয়েই আসফাককে সাধারণ সম্পাদক করে দেওয়া হয়েছে— যা পুরোপুরি নিয়মবিরুদ্ধ।’’

ইস্তিহাকের দাবি, ছাত্র সংসদের ২৮টি আসনের মধ্যে ১৬টিই তাঁর অনুগামীদের দখলে। তাই সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দাবিদার তিনিই। বস্তুত, এই দাবি নিয়েই ইস্তিহাক ও তাঁর দলবল দুপুরে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে আসফাকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে যান। অভিযোগ, সেই সময় নতুন সাধারণ সম্পাদকের অনুগামীরা তাঁদের উপর চড়াও হন। সেই সময় কলেজের কয়েক জন শিক্ষক তাঁদের আগলে সরিয়ে নিয়ে যান। পুলিশের কাছে অভিযোগ করে আক্রান্তরা জানান, আসফাক ও তাঁর অনুগামীরা তাঁদের মারধর করেছে।

Advertisement

ঘটনার খবর পেয়ে কলেজে যান এবিপি আনন্দর দুই সাংবাদিক। আসফাক ও তাঁর অনুগামীরা ওই দুই সাংবাদিকের উপরেও হামলা করে। তাঁদের ক্যামেরার চিপ কেড়ে নেওয়া হয়। ক্যামেরা ভাঙচুরের চেষ্টা হয়। আাক্রান্ত সাংবাদিক হিন্দোল দে-র অভিযোগ, ‘‘আমার ঘাড়ে, পিঠে কিল-ঘুসি মারে ওরা।’’ লাথি ও ঘুষির আঘাতে আলোকচিত্রী সন্দীপ সাধুখাঁর চোখে গুরুতর আঘাত লাগে। তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আসফাক, ওয়াসিম, বিমান এবং উমের নামে চার জনের বিরুদ্ধে গার্ডেনরিচ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রহৃত সাংবাদিকরা। যদিও রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

কলেজ সূত্রের খবর, আসফাক আনসারি কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান রঞ্জিত শীলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। রঞ্জিতবাবু অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘আমি স্থানীয় কাউন্সিলর বলে আমাকে সব ঘটনায় জড়ানো হয়। গত দু’মাস আমি কলেজে যাইনি। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’’ এই ঘটনা নিয়ে টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘অনভিপ্রেত ঘটনা। এ রকম কোনও ঘটনাকেই সংগঠন বরদাস্ত করবে না।’’ অভিযুক্ত আসফাক আনসারি সব শুনে বলেন, ‘‘সব মিথ্যা কথা। ভুল শুনেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন