গায়ে পা লাগার ‘অপরাধে’ বেধড়ক মার ক্যানসার আক্রান্ত যুবককে

মোটরবাইক থেকে নামার সময়ে দোকানের সামনে দাঁড়ানো এক জনের গায়ে পা লেগেছিল। অভিযোগ, সেই ‘অপরাধেই’ ওই যুবককে প্রথমে গালিগালাজ ও পরে তাঁকে বেধড়ক মারধর করল একদল যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলুড় শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৬ ০২:৩১
Share:

মোটরবাইক থেকে নামার সময়ে দোকানের সামনে দাঁড়ানো এক জনের গায়ে পা লেগেছিল। অভিযোগ, সেই ‘অপরাধেই’ ওই যুবককে প্রথমে গালিগালাজ ও পরে তাঁকে বেধড়ক মারধর করল একদল যুবক। এমনকী প্রতিবাদ করায় কাচের বোতল দিয়ে মেরে ওই যুবকের মাথাও ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে জানা যায়, শেখ মিরাজ আলি (৩৫) নামে ওই যুবক ক্যানসারে আক্রান্ত।

Advertisement

রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বেলু়ড়ের গিরিশ ঘোষ রোডের ডন বস্কো মোড়ে। আহত শেখ মিরাজ হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রবিবার রাতেই গ্রেফতার হয় রমেশ গিরি নামে এক যুবক। তবে পুলিশের দাবি, মূল অভিযুক্ত আকাশ সিংহ-সহ আরও দু’তিন জন ঘটনার পরেই চম্পট দেয়।

এলাকাটি হাওড়া পুরসভার ৬০ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানকার তৃণমূল কাউন্সিলর সীমা ভৌমিকের দাবি, আকাশ-সহ অন্যদের নামে তাঁর কাছে আগেও অভিযোগ এসেছে। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের অভব্য আচরণ নিয়ে আগেও পুলিশকে জানিয়েছি। তবে পুলিশের গাড়ি দেখলেই ওঁরা পালিয়ে যায়।’’ প্রশ্ন উঠেছে, কাউন্সিলর, পুলিশের কাছে আগাম অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ঘটনার সময়ে কেন কোনও টহলদারি গাড়ি বা নজরদারি ছিল না?

Advertisement

পুলিশের দাবি, এলাকায় টহলদারি গাড়ি ঘোরে। ঘটনার সময়ে কাছেই লোহা মার্কেটের ভিতরে পুলিশের জিপ টহল দিচ্ছিল। খবর পেয়েই সেটি ঘটনাস্থলে চলে আসে। পুলিশের দাবি, রুটিন মাফিক রোজই রাস্তার ধারে বা অন্যত্র জটলা দেখলে টহলদারি গাড়ি জিজ্ঞাসাবাদ করে। রাত ১১টার পরে কোনও দোকান খোলা থাকলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ডন বস্কো স্কুলের কাছেই এক আবাসনের বাসিন্দা শেখ মিরাজের দর্জির দোকান রয়েছে কলকাতার রিপন স্ট্রিটে। দীর্ঘ দিন কেমোথেরাপির পরে এখন রাজারহাটের একটি ক্যানসার হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। ওই দিন দোকান বন্ধ থাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মেরে, তপন সাঁতরা নামে এক বন্ধুর সঙ্গে বাইকে চেপে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন মিরাজ। তখনই ডন বস্কো মোড়ের পানের দোকানে দাঁড়ান তাঁরা। সেখানেই আকাশ, রমেশ-সহ আরও দু’তিন জন মত্ত অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল বলে অভিযোগ।

শেখ মিরাজের অভিযোগ, বাইক থেকে নামার সময়ে ওই যুবকদের এক জনের গায়ে তাঁর পা লাগে। তিনি ক্ষমাও চান। তবু গালিগালাজ শুরু করেন আকাশেরা। মিরাজ প্রতিবাদ করলে আকাশ, রমেশ-সহ কয়েক জন তাঁকে মাটিতে ফেলে মারতে শুরু করে। মিরাজ কোনওক্রমে একটি মিষ্টির দোকানে ঢুকে পড়লে সেখানে আকাশ তাঁর মাথায় বার বার ঠান্ডা পানীয়ের খালি বোতল দিয়ে আঘাত করে। স্থানীয়েরা এগিয়ে এলে চম্পট দেয় ওই যুবকেরা। পুলিশ জানায়, গোটা ঘটনাটিই রাস্তার সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে। ঘটনাস্থলে একটি বাইক ফেলে যায় অভিযুক্তেরা। পুলিশ সেটি বাজেয়াপ্ত করে। মিরাজের দাদা শেখ বাবুলাল বলেন, ‘‘স্থানীয়েরাই ভাইকে জায়সবাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মাথায় দু’টি সেলাই করে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়।’’ পরে মিরাজকে কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন