ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। সোমবার, রিজেন্ট পার্কে। নিজস্ব চিত্র
গলির ভিতরে একটি চারতলা আবাসন। সেই বাড়ির চারতলায় সিঁড়ির রেলিং থেকে পর্দার কাপড় দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বছর পঞ্চাশের ওই মৃত ব্যক্তির পরনে ছিল শুধু একটি হাফ প্যান্ট। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্ক থানার ক্ষেত্রমোহন নস্কর রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত মৃতের পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ ৩০ নম্বর ক্ষেত্রমোহন নস্কর রোড থেকে ফোন করে বলা হয়, আবাসনের সিঁড়িতে এক অপরিচিত ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়েই রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ গিয়ে ওই প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আবাসনের ভিতরে সিঁড়ি থেকে এ ভাবে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফরেন্সিক দল, লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের অফিসারেরা। তাঁরা ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা রক্তের নমুনা এবং রেলিং থেকে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেন।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আবাসনে ঢুকে চারতলার সিঁড়িতে উঠে ঝুলে পড়লেন, অথচ কেউ জানতে পারল না? তা হলে কি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে? আপাতত পুলিশ সব দিকই খতিয়ে দেখছে। কারণ, যে আবাসনে এই ঘটনা ঘটেছে, তার নীচে একাধিক গাড়ি রাখা থাকলেও চত্বরের গেট খোলা ছিল। কেন খোলা ছিল— আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিকে, ওই আবাসনের কয়েকটি বাড়ি পরে থাকা এক যুবক সোমবার ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে জানান, রবিবার রাত একটা নাগাদ কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে তিনি ওই ব্যক্তিকে দৌড়তে দৌড়তে তাঁদের বাড়ির পাশেই আসতে দেখেছিলেন। সেই সময়েই তাঁর গায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। তাঁকে দৌড়তে দেখে পাড়ার কয়েকটি কুকুরও চেঁচামেচি করছিল বলে ওই যুবক পুলিশকে জানান। পুলিশ ওই যুবকের বক্তব্য শুনে আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর করা শুরু করেছে।
বেশ কয়েক মাস আগে এই ক্ষেত্রমোহন রোডেই এ রকম একটি চারতলা আবাসনের নীচে এক ব্যক্তির রক্তাক্ত দেহ পাওয়া গিয়েছিল। সেই সময়ে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছিল, চুরি করতে এসে উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। সেখানেও মৃত ব্যক্তির পরনে ছিল হাফ প্যান্ট। যদিও চুরি করতে এসে চারতলার ছাদ থেকে তিনি কী ভাবে পড়ে গেলেন, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। সোমবারের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ওই ব্যক্তি যদি আত্মহত্যাই করে থাকেন, তা হলে আবাসনের চারতলায় উঠে কেন করলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।