Bamangachhi

হাল ফিরেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের, চালু কোভিড নমুনা সংগ্রহও

বামনগাছির মালিয়াকুড়ের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক না আসায় প্রায়ই তা বন্ধ থাকার অভিযোগ উঠেছিল। এখন সেই সমস্যারও সমাধান করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০২:৪১
Share:

ভোলবদল: পিপিই পরে এক স্বাস্থ্যকর্মী লালারসের নমুনা সংগ্রহ করছেন। বারাসতের ছোট জাগুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র

স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি ছিল বেহাল অবস্থায়। কোথাও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চত্বর ভরে ছিল আগাছা ও ঘাসে। সেখানে ঘুরে বেড়াত গরু-ছাগল। কোথাও আবার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে অবাধে ঘুরত সাপ। কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আবার আমপানের সময়ে গাছ পড়ে ভেঙে গিয়েছিল মহিলাদের একমাত্র শৌচালয়টি। এর সঙ্গেই ছিল চিকিৎসক না থাকার সমস্যা। অভিযোগ, চিকিৎসকের বদলে ওষুধ দিতেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাই। কয়েক মাস আগে এমনই চিত্র ছিল বারাসত (১) ব্লকের স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির। লকডাউনের মধ্যে জেলা বা কলকাতার হাসপাতালে পৌঁছতে পারছিলেন না এলাকার বাসিন্দারা। ফলে নানা সমস্যা নিয়ে মানুষ, বিশেষত প্রসূতিরা ভিড় করছিলেন স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেই। কিন্তু সেখানে গিয়েও মিলছিল না পরিষেবা।

Advertisement

সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রকাশ হওয়ার পরে অবশ্য নড়েচড়ে বসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কয়েক মাসের মধ্যে বদলে যায় আগের চিত্র। তার ফলেই সম্প্রতি ‘মাতৃমা’ প্রকল্পে জেলায় প্রথম স্থান দখল করেছে বারাসত (১) ব্লক। গর্ভবতীদের শারীরিক পরীক্ষা, টিকা দেওয়া ও সরকারি সাহায্য প্রদানকারী হিসেবে জেলার শীর্ষে রয়েছে এই ব্লক। এ ছাড়াও বদল এসেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির চেহারাতেও। এই বিষয়ে শনিবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘ব্লকের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির কী কী সমস্যা রয়েছে, তা পর্যালোচনা করে সমাধান করা হয়েছে। তার ফলেই বারাসত (১) ব্লক চিকিৎসায় এখন জেলার শীর্ষ স্থানে রয়েছে।’’

কদম্বগাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিছু দিন আগেও রোগীরা যেতে ভয় পেতেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আগাছা ভর্তি চত্বরে ঘুরত বিষধর সাপ। চিকিৎসক না থাকায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা লম্বা লাঠির মাথায় বাটি বেঁধে করোনার মধ্যেই ওষুধ দিতেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। এখন সেখানে দেখা গেল, চিকিৎসকেরা বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন। দূরত্ব-বিধি মেনে চলছে ওষুধ দেওয়া। সুরজাহান বিবি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগেও চিকিৎসা করাতে এলে সাপের ভয় পেতাম। এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ায় আমার মতো অনেক রোগী নিশ্চিন্তে আসছেন।’’

Advertisement

আমপানে গাছ পড়ে ছোট জাগুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মহিলাদের শৌচালয়টি ভেঙে গিয়েছিল। এতে সমস্যায় পড়তেন মহিলারা, বিশেষত অন্তঃসত্ত্বারা। সেটিকে সারানো হয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিড পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রও চালু হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট জাগুলিয়ায় প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। বামনগাছির বাসিন্দা সায়ন মল্লিক বলেন, ‘‘এখানে সরকারি ভাবে কোভিডের নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র গড়ে তোলায় স্থানীয় মানুষের খুব সুবিধা হয়েছে।’’

বামনগাছির মালিয়াকুড়ের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক না আসায় প্রায়ই তা বন্ধ থাকার অভিযোগ উঠেছিল। এখন সেই সমস্যারও সমাধান করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।বারাসত (১) ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক সব্যসাচী রায় বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় বহু অভিযোগ ছিল। সে সব সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। এই ব্লকের মানুষ এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিভিন্ন পরিষেবা পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে যাতে আরও রোগের চিকিৎসা মেলে, সে বিষয়েও নজর দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন