গত বছর মার্চ মাস থেকে কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য কমিশন। তার পরে কেটে গিয়েছে দশ মাস। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির প্রায় ২৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে মাত্র ২৫টি অভিযোগের মীমাংসা করেছে কমিশন।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে মীমাংসার প্রভাব কি স্বাস্থ্য পরিষেবায় আদৌ পড়ছে? রোগীরা কি আরও ভাল পরিষেবা পাচ্ছেন? নাকি শুধুই অভিযোগ
পত্র জমা দেওয়ার আর একটি নতুন ঠিকানা হয়ে উঠছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন!
২০১৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শহরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসার অতিরিক্ত খরচ এবং বিলের অস্বচ্ছতার অভিযোগ নিয়ে শহরের একাধিক বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাদের ভর্ৎসনা করেন তিনি। এর পরে বিধানসভায় ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট পাশ হয়। তৈরি হয় স্বাস্থ্য কমিশন।
বুধবার শহরের তিনটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন উঠছে, অভিযোগ জানানোর জায়গা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সুরাহা কতটা পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা?
চিকিৎসকদের সংগঠন ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’-এর তরফে চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যের খাতে ব্যয় না বাড়ালে রোগী পরিষেবায় কোনও পরিবর্তন হবে না। কমিশন তৈরি কিংবা বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক, সবই ছিল সরকারের চটকদারি। লোক-দেখানো কাজ করে পরিবর্তন সম্ভব নয়।’’
স্বাস্থ্য কমিশন রোগী পরিষেবায় কোনও উন্নতি তো ঘটায়ইনি, বরং হাসপাতালে গোলমাল আর চিকিৎসক নিগ্রহ আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের আর এক সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্য কমিশনের প্রভাব বুঝতে হয়তো আরও সময় দরকার। কিন্তু যে পথে পুরো বিষয়টি এগোচ্ছে তাতে রোগী পরিষেবার উন্নতি কতটা হবে সে নিয়ে প্রশ্ন থাকছে!’’
যদিও আইএমএ-র রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তনু সেন মনে করেন— স্বাস্থ্য কমিশনের কার্যকাল এক বছরও পূর্ণ হয়নি। এখনই তার প্রভাব কতটা, বিচার করা ঠিক নয়। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। সেই জন্যই সরকারি হাসপাতালের পরিষেবায় অনেক উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরিষেবাতেও যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, সেটাও দেখছে সরকার।