স্তব্ধ: যানজটে থমকে ধর্মতলা। বুধবার দুপুরে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
দিনভর যানজটে নাজেহাল হল শহরের নানা প্রান্ত।
মাঝেরহাটে সেতু ভাঙার জের, সঙ্গে পুজোর বাজারের চাপ সামলাতে ক’দিন ধরে নাকাল হচ্ছিলই শহর। বুধবার তারই সঙ্গে যুক্ত হল রাজনৈতিক দলের মিছিল ও সভা। যার ফলে শহরের মধ্যে চলাফেরা করতে গিয়ে রীতিমতো নাকাল হলেন সাধারণ মানুষ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার দুপুর একটা নাগাদ ‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন’-এর উদ্যোগে ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদ থেকে একটি বিশাল মিছিল বেরোয়। মিছিল শেষ হয় গাঁধী মূর্তির পাদদেশে। এর পরে সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ সভা চলে। পুলিশ জানিয়েছে, ইমাম-মোয়াজ্জেনদের ভাতাবৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবি নিয়ে এই মিছিলের জেরে গোটা ধর্মতলা চত্বর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, মিছিলে প্রায় সাত হাজার মানুষ পা মেলানোয় উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, রানি রাসমণি রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, পার্ক স্ট্রিট, মেয়ো রোডে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় পুজোর মুখে ধর্মতলা চত্বরে এমনিতেই গাড়ির চাপ যথেষ্ট বেশি থাকে। তার উপরে এ দিন সেখানেই মিছিল থাকায় চরম যান-যন্ত্রণায় ভুগতে
হয়েছে শহরবাসীকে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনই দুপুরে বাম ও বিভিন্ন গণ সংগঠনের ডাকে যাদবপুর-সহ শহরের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে বিশাল মিছিল বেরোয়। যাদবপুরের সুকান্ত সেতু থেকে পায়ে হেঁটে রাজা সুবোধ মল্লিক রোড, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড হয়ে মিছিল আসে শহিদ মিনার পর্যন্ত। বাম ও একাধিক গণ সংগঠনের এই মিছিলের জেরে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন অংশে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। রাজা সুবোধ মল্লিক রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে গাড়ির গতির খুব শ্লথ হয়ে পড়ে। মাঝেরহাট ব্রিজ ভাঙার পর থেকে শহরের বিস্তীর্ণ অংশে এমনিতেই ঢিম গতিতে চলছে গাড়ি। এ দিন বামেদের শহিদ মিনারে সমাবেশের জেরে সেই চাপ আরও বাড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, মিছিল-সমাবেশের মাঝেই কাদাপাড়ার কাছে ই এম বাইপাসের উপরে একটি অ্যাপ-ক্যাবে আগুন লেগে যায় এ দিন দুপুরে। এই আগুনের ফলে প্রায় এক ঘণ্টা ই এম বাইপাসের একাংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। বাইপাসের মতো ব্যস্ত রাস্তার একটি দিক পুরোপুরি বন্ধ থাকার ফলে কিছু ক্ষণেই সার দিয়ে আটকে পড়ে বহু গাড়ি। এর ফলে যানজটে নাকাল হন ওই এলাকার যাত্রীরা। লেক টাউনের বাসিন্দা অভিষিক্তা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্টোডাঙা থেকে ই এম বাইপাস হয়ে যাদবপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, উল্টোডাঙা উড়ালপুলের উপরেই প্রায় আধ ঘণ্টা আটকে থাকে তাঁর গাড়ি।