রাস্তা তৈরি ও তা সারানোর ধরন নিয়ে হাওড়া পুর কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি মামলার শুনানিতে শুক্রবার ওই হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাটি দায়ের করেছেন হাওড়ার শিবপুরের কয়েক জন বাসিন্দা।
ওই বাসিন্দাদের পক্ষের আইনজীবী সপ্তাংশু বসু জানান, আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, অনিয়মিত হলেও পিচের প্রলেপ পড়ছে বিভিন্ন রাস্তায়। আর তাতেই বিপত্তি বাড়ছে হাওড়া শহরে। এবড়ো-খেবড়ো আস্তরণ তুলে না ফেলে ফের পিচ ঢেলে রাস্তা তৈরি করায় কোথাও নিকাশি নালার চেয়ে রাস্তা উঁচু হয়ে যাচ্ছে। আবার, কোথাও বাড়ির দরজা থেকে রাস্তার উচ্চতা বেশি অন্তত পাঁচ-ছ’ইঞ্চি। তার জেরে অল্প বৃষ্টিতে জল জমছে। রাস্তায় জমে থাকা জল ঢুকে যাচ্ছে বাড়ির ভিতরে। সেই জল আর নিকাশি নালায়।
পাশাপাশি, রাস্তায় চলাফেরার ক্ষেত্রে ঘটে যাচ্ছে অনেক দুর্ঘটনাও। ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হাওড়া পুর এলাকায় রাস্তা তৈরি ও মেরামতির দায়িত্বে পুরসভা ও পূর্ত দফতর।
এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কৌঁসুলির কাছে জানতে চায়, পূর্ত দফতর রাস্তা তৈরি ও মেরামতি ঠিক মতো করছে না কেন? রাজ্যের কৌঁসুলি পূর্ত দফতরের পেশ করা একটি হলফনামা দাখিল করে জানান, পিচের পুরনো সমস্ত আস্তরণ তুলে ফেলে নিকাশি নালা বরাবর রাস্তার উচ্চতা বজায় রাখতে গেলে যে খরচ হবে, তা বহন করার ক্ষমতা পূর্ত দফতরের নেই। ওই কাজ করতে গেলে রাস্তা তৈরির খরচ এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যাবে।
রাজ্যের কৌঁসুলি আরও জানান, ওই পদ্ধতিতে রাস্তা তৈরি বা মেরামতি করতে গেলে যান চলাচল দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখতে হবে। তা শুনে আইনজীবী সপ্তাংশুবাবু বলেন, ‘‘পুজোর বিসর্জন বা অন্য কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের শোভাযাত্রা বেরোলে প্রশাসন রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখে। ঠিক পদ্ধতিতে রাস্তা তৈরি করতে হলে যান চলাচল কিছু ক্ষণ বন্ধ রাখাই যায়।’’
বিচারপতি মাত্রে রাজ্যের কৌঁসুলির উদ্দেশে বলেন, ‘‘প্রয়োজনে রাস্তার এক দিক খোলা রেখে যান চলাচল করাতে হবে।’’ হাওড়া পুরসভার আইনজীবী শান্তনু চট্টোপাধ্যায়কে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে হলফনামা পেশ করে তার নথি মামলার আবেদনকারীদের হাতে দিতে হবে। আগামী ৯ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।