গরম চাঁদনি, ফাঁপরে মেট্রো

রেলের নিয়ম অনুযায়ী তাপমাত্রা থাকার কথা ২৪ থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে। কিন্তু সেখানে কোনও দিন থাকছে ৩৮, কোনও দিন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক বছর ধরেই চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তাপমাত্রা এ ভাবে বাড়তে থাকায় যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে এলেই চোখ-মুখ জ্বলে যাচ্ছে যাত্রীদের।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০১
Share:

রেলের নিয়ম অনুযায়ী তাপমাত্রা থাকার কথা ২৪ থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে। কিন্তু সেখানে কোনও দিন থাকছে ৩৮, কোনও দিন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক বছর ধরেই চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তাপমাত্রা এ ভাবে বাড়তে থাকায় যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে। প্ল্যাটফর্মে এলেই চোখ-মুখ জ্বলে যাচ্ছে যাত্রীদের।

Advertisement

অভিযোগ শুনে এ বারও মেট্রোকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্যের সার কথা, ‘কাজ চলছে, শীঘ্রই অসুবিধা দূর হয়ে যাবে।’ এ কথা শুনে যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া, চাঁদনি-সহ আরও কয়েকটি স্টেশনে তাপমাত্রা যে বাড়ছে, তা কর্তৃপক্ষ জানেন। যাত্রীদের তরফেও বারবার মেট্রোকে জানানো হয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। তাঁরা আবারও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

দমদমের বাসিন্দা রোহন চক্রবর্তী বা লেকের বাসিন্দা মনীষা দত্তের মতো বহু যাত্রী চাকরি সূত্রে চাঁদনি চকে যাতায়াত করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘ভিতরে এত গরম যে ট্রেন আসার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা প্ল্যাটফর্মে নামি না। স্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকি। সময় হলে ভিতরে যাই।’’ যাত্রীদের এই বক্তব্য যে অনেকাংশে সত্যি, সেটা মেট্রো কর্তাদের একাংশের কথাতেও স্পষ্ট। তাঁরা জানিয়েছেন, কলকাতা মেট্রোর যখন নকশা করা হয়েছিল, তখন সুড়ঙ্গ দিয়ে যে বাতানুকূল ট্রেন চলবে তা মাথায় রাখা হয়নি। তা-ই বিপত্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাঁদের কথায়, সুড়ঙ্গের নিজস্ব তাপমাত্রা আছে। বাইরের তাপমাত্রা বাড়লে তা বেড়ে যায়। তার উপরে বাতানুকূল ট্রেন থেকে নির্গত তাপ— দুইয়ে মিলে যাত্রীদের অস্বস্তি অনেক গুণ বাড়িয়ে তুলছে।

Advertisement

কেন বাড়ছে তাপমাত্রা? মেট্রো সূত্রের খবর, মেট্রো সুড়ঙ্গের সব স্টেশনেই এসি রাখার কথা। যাতে স্টেশনগুলির তাপমাত্রা যাত্রীদের সহনশীলতার মধ্যে থাকে। কিন্তু চাঁদনি চক ছাড়াও আরও পাঁচটি (গিরীশ পার্ক, মহাত্মা গাঁধী, যতীন দাস পার্ক, কালীঘাট ও রবীন্দ্র সরোবর) স্টেশনে এসি ঠিক মতো কাজ করছে না। ফলে ওই স্টেশনগুলিতে তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গিয়েছে। মেট্রো কর্তাদের একাংশের মতে, সুড়ঙ্গে হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা সঠিক হলে এই তাপমাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক রাখা যেত। কিন্তু সুড়ঙ্গের অনেকটা এলাকাতেই বাতাস চলাচলের (এয়ার ভেন্টিলেশন) যে ব্যবস্থা আছে, সেগুলি পুরনো হয়ে কার্যত বিকল হয়ে গিয়েছে। তার ফলেই এই বিপত্তি।

এই অবস্থায় কী করছে মেট্রো? মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশা, ২০১৬-র গরমের আগেই যাত্রীরা এই অসুবিধা থেকে অনেকটা মুক্তি পাবেন। তাঁর কথায়, ‘‘চাঁদনি চক স্টেশনে তিনটি এসি-র একটি সামনের বছর গরমের আগেই সারিয়ে দেওয়া হবে। আর একটি নতুন এসি বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ পাশাপাশি, আরও একটি এসি কেনার জন্য রেল বোর্ডের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’ এ ছাড়া, বাকি পাঁচটি স্টেশনেও পুজোর আগেই বিকল যন্ত্রগুলি সারিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে বলে ইন্দ্রাণীদেবী জানিয়েছেন।

জনসংযোগ আধিকারিকের বক্তব্য শুনে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন, এমনিতেই চাঁদনি চক স্টেশনে যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি। তার পরে সামনে পুজোর ভিড়। তখন কী হবে?

অন্য দিকে, শুক্রবার সকালে ফের বিপত্তি হয় একটি এসি মেট্রোয়। এ বার ব্রেক আটকে। মেট্রো সূত্রে খবর, এ দিন রেকটিকে কবি সুভাষের ওয়াই সাইডিং-এ ঘোরানোর সময়ে এই গোলমাল বাধে। এর জেরে ব্যস্ত সময়ে ১৫ মিনিট ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। নতুন এই রেকটিতে কেন এই বিপত্তি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন