নারকেলডাঙার অপহৃত কিশোরী উদ্ধার ভদ্রকে

পেশাদার অপহরণকারীদের কবল থেকে কোনও মতে উদ্ধার হয়ে ভদ্রক থেকে কলকাতা ফিরল নারকেলডাঙার কিশোরী। মামারবাড়ির আবদারের প্রলোভনে অপহৃত হতে হয়েছিল তাকে। কলকাতা থেকে অপহরণ করে ভদ্রক নিয়ে গেলেও শেষমেশ পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ১৩:৩৩
Share:

পেশাদার অপহরণকারীদের কবল থেকে কোনও মতে উদ্ধার হয়ে ভদ্রক থেকে কলকাতা ফিরল নারকেলডাঙার কিশোরী। মামারবাড়ির আবদারের প্রলোভনে অপহৃত হতে হয়েছিল তাকে। কলকাতা থেকে অপহরণ করে ভদ্রক নিয়ে গেলেও শেষমেশ পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। দুই অপহরণকারীও তাদের জালে ধরা পড়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তারা দু’জনেই পেশাদার অপহরণকারী।

Advertisement

দিনটা ছিল গত ২৭ জুলাই। ভর দুপুরে স্কুল থেকে ফিরেছিল ওই কিশোরী। নারকেলডাঙার কসাইবস্তি ফার্স্ট লেনের বাড়িতে ঢুকেই খুশিতে মেতে উঠেছিল সে। মামারবাড়ির দেশের দুই ‘মামা’ এসেছে বাড়িতে! ওই দু’জনের মধ্যে এক ‘মামা’কে সে খুব ভাল করে চেনে। বিহারের সিওয়ানে তার মামারবাড়িতে বেশ কয়েক বার দেখেছে। শুধু সে নয়, তার মা-বাবার কাছেও বেশ পরিচিত মুখ শেখ আবদুল্লা। কলকাতায় কাজে এসে ‘দিদি’র বাড়ি এক বার ঘুরে যাওয়ার উদ্দেশেই বন্ধু ফিরোজ আলমকে নিয়ে ওই কিশোরীদের বাড়িতে এসেছিল সে। স্কুল থেকে ফেরার পর বেশ কিছু ক্ষণ গল্পগুজব চলে। তার পরে আবদুল্লা ওই কিশোরীকে বলে, ‘‘তোদের পাড়াটা একটু ঘুরে দেখাবি না?’’ ‘মামা’দের সঙ্গে নিয়ে এর পরে পাড়া দেখাতে বেরোয় ওই কিশোরী।

কিছু ক্ষণ ঘোরাঘুরির পর আবদুল্লা ওই কিশোরীকে বলে, ‘‘চল মামারবাড়ি যাবি?’’ প্রথমে মজা ভেবে কথাটা উড়িয়ে দেয় সে। কিন্তু, দু’জনে মিলে বার বার বলার পর একটু ঘাবড়ে যায়। জানায়, এ ভাবে যাওয়া যায় নাকি! সবচেয়ে বড় কথা বাড়িতে বলা নেই কওয়া নেই! কিন্তু, কিশোরীর কোনও কথাকেই আমল দেয়নি ওই দু’জন। তারা জানায়, বাড়িতে বলা আছে। কিশোরীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে তাদের অনুমতি নিয়েই তারা মামারবাড়িতে যাওয়ার কথা বলছে। দোনামনা করে ‘মামা’দের আবদার মেনে তাদের সঙ্গে মামারবাড়ির পথে রওনা দেয় সে।

Advertisement

কিন্তু, কোথায় মামারবাড়ি! বিহারের বদলে ওই দু’জন তাঁকে নিয়ে ওড়িশা যায়। সেখানে একটা বাড়িতে আটকে রাখা হয় তাকে। দু’দিন পরে সেখান থেকেই ওই কিশোরীর বাবাকে ফোন করে তারা। মেয়ের মুক্তিপণ হিসেবে দু’লাখ টাকা চাওয়া হয় তাঁর কাছে। জানানো হয়, টাকা দিতে আসতে হবে পুরীর কাছে ভদ্রকে। অন্য দিকে, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে না পেয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল ওই কিশোরীর পরিবারের লোকজন। এর মধ্যেই ওই ফোন আসে। পুলিশ মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে জানা যায়, ফোনটি এসেছিল ভদ্রক থেকেই। এর পর পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে পুরী রওনা হয় পুলিশ।

রবিবার রাতে ভদ্রক পৌঁছয় তারা। কিশোরীর বাবার সঙ্গে ফোনে হওয়া কথা মতো স্টেশনের কাছেই জাতীয় সড়কের উপর ওই কিশোরীকে নিয়ে অপেক্ষা করছিল দু’জন। তাদের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার মুহূর্তে পুলিশ হাতেনাতে ধরে ফেলে তাদের। পুলিশ তখনই তাদের গ্রেফতার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন