ফাইল চিত্র।
ইঁদুরের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হিন্দু হস্টেলের মেঝে। অবস্থা এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা সারাতে বেশ কয়েক মাস লেগে যাবে। তার পরে ওই হস্টেলকে সম্পূর্ণ বাসযোগ্য করে তুলতে বছর ঘুরে যাবে বলেই মনে করছেন এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হেরিটেজ স্থপতি পার্থরঞ্জন দাস।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এই হস্টেল ২০১৫ সালের জুলাই মাসে সংস্কারের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে সময়ে আবাসিকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয় রাজারহাটে। কথা ছিল, ১১ মাসের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করে চালু হয়ে যাবে হিন্দু হস্টেল। কিন্তু এত দিনেও তা হয়নি। ২০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রেসিডেন্সিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু সেজে ওঠা প্রেসিডেন্সির পাশে অন্ধকারে ডুবে রয়েছে ১৩২ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই হস্টেল।
পার্থরঞ্জনবাবু বুধবার জানান, হস্টেলের দেওয়াল সংস্কারের কাজ অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শতাব্দীপ্রাচীন ওই হস্টেলের মেঝের কাজে হাত দিতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ইঁদুরের আক্রমণে মেঝে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি বলেন, ‘‘একেবারে ভিতর থেকে মেঝের সংস্কারের কাজ করতে হবে। যে মেঝে রয়েছে, তা রেখে কাজ করা সম্ভবই নয়। ইঁদুর এত ক্ষতি করেছে।’’ তিনি জানান, এই কাজ করতেই ছ’মাস লেগে যাবে। এর পরে আরও কাজ থাকবে, যা শেষ হতে হতে বছর ঘুরে যাবে। পরিস্থিতি যা, তাতে এ বারও জুলাই মাসে নতুন পড়ুয়ারা এসে এখানে থাকতে পারবেন না বলেই বিভিন্ন মহলের ধারণা।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী সংসদ কিছু দিন আগেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বলেছে, হিন্দু হস্টেল সংস্কারের নামে ফেলে রাখা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হলেও তার অগ্রগতি বিশেষ কিছু হয়নি।
সূত্রের খবর, এত দিন ধরে সংস্কারের কাজ চলার ফলে আগে সংস্কারের জন্য যে বাজেট ছিল, তা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। জিএসটি চালুও ব্যয়বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সম্প্রতি প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত আর কত টাকা সংস্কারের জন্য প্রয়োজন, তার হিসেব পার্থরঞ্জনবাবুকে দিতে বলেছেন। পার্থরঞ্জনবাবু এ দিন জানান, সেই বাজেট তিনি এখন তৈরি করছেন।
হিন্দু হস্টেলকে এ ভাবে ফেলে রাখার বিরুদ্ধে গত দু’বছরে বারবারই সরব হয়েছেন পড়ুয়ারা। এ দিনও এসএফআই-এর পক্ষ থেকে হিন্দু হস্টেল খোলার দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার অবশ্য এ দিন জানিয়েছেন, হস্টেল খোলার জন্য তাঁরা সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছেন।