এই অবস্থাতেই রয়েছে হাওড়া স্টেশনের শৌচাগার। নিজস্ব চিত্র
আগে খরচ ছিল তিন টাকা। এখন হয়েছে পাঁচ টাকা। কিন্তু যাত্রী পরিষেবারহাল সেই একই রকম শোচনীয়।
রোজ লক্ষ মানুষের যাতায়াত যেখান দিয়ে, সেই হাওড়া স্টেশনের শৌচাগারগুলি নিয়ে এমনই অভিযোগ যাত্রীদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, ব্যবহার তো দূর অস্ত্, দেখভালের অভাবে স্টেশনের শৌচাগারগুলিতে ঢোকাই বিপজ্জনক। ওগুলি ব্যবহার করলে উল্টে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
মহিলা যাত্রীদের অভিযোগ, হাওড়া স্টেশনের নতুন প্ল্যাটফর্মে যে শৌচাগারটি রয়েছে সেটিতে কমোড নেই। ফলে বয়স্ক ও অসুস্থ যাত্রীদের পক্ষে শৌচাগার ব্যবহার করা অসম্ভব। যে প্যানগুলি বসানো রয়েছে সেগুলিরও হাল তথৈবচ। সেগুলির পিছনে সিস্টার্নও নেই। কয়েকটিতে জলের পাইপ মাঝখান থেকে ভেঙে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে সেটি পিঠে লেগে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
যাত্রীদের অভিযোগ, ১৭-১৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম লাগোয়া শৌচাগারটির মেঝেতে সারা ক্ষণ জল জমে থাকে। ওই শৌচাগারটিতে একটি বেসিন থাকলেও সেটির পাশে এমন ভাবে মালপত্র রয়েছে, যে সেটি ব্যবহার করাই দায়। পাশে আর একটি বেসিন উধাও বহু দিন আগেই। শুধু হাওড়া স্টেশন নয়, অন্য স্টেশনগুলিতেও একই চিত্র। যাত্রীদের অভিযোগ, বারবার বলেও রেল কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রিয়।
যে শৌচাগারটি নিয়ে সব চেয়ে বেশি সমস্যা, সেটি রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের নতুন প্ল্যাটর্ফমে। এই রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, হাওড়া স্টেশন ভবনটির দেখভাল করে পূর্ব রেল। কিন্তু যাত্রীরা বলছেন, তাঁরা সবাই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের যাত্রী। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব রেল দায় এড়াতে পারে না। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রও ‘দেখছি’ বলে এড়িয়েছেন।
শুধু শৌচাগার নয়, নতুন থেকে পুরনো প্ল্যাটফর্মে যাতায়াতের জন্য হাওড়া স্টেশনে যে চলমান সিঁড়ি লাগানো হয়েছিল, সেটিও দীর্ঘ দিন ধরে অচল। যাত্রীদের নিত্য দিনই পায়ে হেঁটে দেড়শো সিঁড়ি ভাঙতে হচ্ছে। যাত্রীদের বক্তব্য, ‘স্বচ্ছ ভারত’ প্রকল্পের ‘রেল পক্ষ’-তে বারবার এই সাধারণ যাত্রী পরিষেবার উন্নতির কথাই বলা হয়েছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে যেতেই কেউ সামান্যতম দেখভালটুকুও করছে না।