Dengue

নবান্নের পাড়ায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু

ডেঙ্গি সংক্রমণের প্রকৃত তথ্য ‘চেপে দিতে’ যাদের তৎপরতা এখন তুঙ্গে বলে বারংবার অভিযোগ উঠছে, সেই প্রশাসনিক সদর দফতরের নাকের ডগাতেই এ বার ওই রোগে মৃত্যু হল এক গৃহবধূর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৩৪
Share:

ডেঙ্গি সংক্রমণের প্রকৃত তথ্য ‘চেপে দিতে’ যাদের তৎপরতা এখন তুঙ্গে বলে বারংবার অভিযোগ উঠছে, সেই প্রশাসনিক সদর দফতরের নাকের ডগাতেই এ বার ওই রোগে মৃত্যু হল এক গৃহবধূর। কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নয়, খাস সরকারি হাসপাতালে। শনিবার রাতে ডেঙ্গিতে বালির এক বৃদ্ধার মৃত্যুর পরে নবান্ন থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা যথেষ্ট সক্রিয় নয় বলেই এ ভাবে ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে।পুরসভার অবশ্য দাবি, তাদের কর্মীরা ওই এলাকায় নিয়মিত কাজ করেছেন। পুরকর্তারা উল্টে দোষ চাপিয়েছেন বাসিন্দাদের ঘাড়ে। তাঁদের বক্তব্য, মানুষ সচেতন নন বলেই ডেঙ্গি বাড়ছে।

Advertisement

গত শনিবার প্রবল জ্বর নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে সোমবার ভোরে মারা যান শিবপুরের শরৎ চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা রুনু দে (৩২)। হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভর্তির পরেই পরীক্ষা করে দেখা যায়, রুনুদেবীর প্লেটলেট নেমে গিয়েছে ২০ হাজারের নীচে। রক্তের আইজিএম পরীক্ষা করে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। ডেথ সার্টিফিকেটেও তার উল্লেখ রয়েছে।

এ দিন নবান্নের পিছনে শরৎ চ্যাটার্জি রোডে মৃতার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গোটা পরিবার আতঙ্কিত। প্রথমে কেউ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাই বলতে চাননি। পরে জানানো হয়, কয়েক দিন ধরে জ্বর হচ্ছিল রুনুদেবীর। শনিবার বাড়াবাড়ি হতে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দু’দিনের মধ্যে মৃত্যু। মহুয়া দে নামে এক আত্মীয় বলেন, ‘‘হাসপাতাল বলেছিল, ডেঙ্গি হয়েছে। রিপোর্ট আসার মাত্র এক দিনের মধ্যে কী ভাবে উনি মারা গেলেন, বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

রুনু দে-র ডেথ সার্টিফিকেট। লেখা রয়েছে, মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি। নিজস্ব চিত্র

মৃতার শ্বশুরবাড়ি হাওড়া পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে। বাসিন্দারা জানান, এ দিন সকালে ওই মহিলার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই পুর স্বাস্থ্যকর্মীরা তড়িঘড়ি এসে ব্লিচিং পাউডার ও মশা মারার ধোঁয়া ছড়িয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দা সৌমেন দে বলেন, ‘‘ব্লিচিং ও মশা মারার তেল আরও বেশি করে ছড়ানো উচিত ছিল। পুরসভার ঘুম ভাঙল বড্ড দেরিতে।’’ আর এক বাসিন্দা তরুণ দে বলেন, ‘‘প্রবল আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।’’

বালিতে বৃদ্ধার মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়েছে কি না, তা নিয়ে হাওড়া পুরসভায় দ্বিমত থাকলেও এ দিন রুনুদেবীর মৃত্যু নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। বরং পুরসভার চিকিৎসক-মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে জায়গায় এটি ঘটেছে, সেখানে আমাদের কর্মীরা ভালই কাজ করেছেন। তার পরেও কেন ঘটল, খোঁজ নিতে হবে। তবে, সামগ্রিক ভাবে হাওড়ায় এ বার ডেঙ্গির প্রকোপ অনেক কম।’’

মেয়র এ কথা বললেও হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য-আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘গোটা হাওড়া জেলায় যেখানে ২৯৫ জনের ডেঙ্গির খবর মিলেছে, সেখানে শুধু হাওড়া পুরসভাতেই আক্রান্ত ১২৩ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন