প্রতীকী ছবি।
দিনেদুপুরে ধারালো অস্ত্রের ঘায়ে গৃহবধূকে গুরুতর জখম করার পরে লুঠপাট চালানোর অভিযোগ উঠল তাঁরই এক পরিচিতের বিরুদ্ধে। সোমবার, বালির বাদামতলার ঘটনা। রাখি সিংহ (৩২) নামে ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে সেখানেই মারা যান তিনি। অভিযুক্ত যুবক পলাতক।
পুলিশ জানায়, বাদামতলার জি টি রোডে চারতলা আবাসনে স্ত্রী রাখি ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন চা ব্যবসায়ী মনোজ সিংহ। এ দিন বিকেলে আবাসনেরই একতলার বাসিন্দা রমা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে বড় মেয়ে খুশিকে পড়তে দিয়ে এসেছিলেন রাখি। জানিয়েছিলেন, ‘দেশ’ থেকে পরিচিত লোক এসেছেন। তাই মেয়েকে পড়তে দিয়ে ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন তিনি।
পুলিশ জানায়, এর কিছুক্ষণ পরেই দরজায় এলোপাথাড়ি শব্দ শুনে রমাদেবী দরজা খুলে দেখেন, রাখির গলার নলি কাটা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা শরীর। তিনি বলেন, ‘‘দরজা খুলতেই দেখি রাখির গলার নলির কাছে কয়েক ইঞ্চি গর্ত।’’ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে কলকাতা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই রাতে মারা যান রাখি।
রাখির ছোট মেয়ে অঞ্জলিকে জিজ্ঞাসা করে পুলিশ জেনেছে, বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ এক যুবক তাদের ফ্ল্যাটে আসে। অঞ্জলি তাকে পিন্টু কাকা নামে চেনে। পরিচিত হওয়ায় রাখিও ওই যুবককে ফ্ল্যাটে ঢুকতে দিয়েছিলেন। অঞ্জলি পুলিশকে জানিয়েছে, টাকা চাওয়া ঘিরে রাখি ও পিন্টুর ঝগড়া শুরু হয়। তা গড়ায় হাতাহাতিতে। অভিযোগ, তখনই পিন্টু আনাজ কাটার ছুরি দিয়ে রাখির গলার নলি কেটে দেয়। তিনি মেঝেয় পড়ে গেলে আলমারি খুলে লুঠপাট
চালায় পিন্টু। ফ্ল্যাট থেকে কয়েকটি খালি বাক্সও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
দিল্লির দূষণে বিপদের আঁচ পেয়েছে কলকাতা
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফ্ল্যাটের ডাইনিং, বেডরুম, রান্নাঘরে চাপচাপ রক্ত। বিছানায় ছড়িয়ে চায়ের কাপ, বিস্কুট, ঝুরিভাজা, কাচের চুড়ির টুকরো। এক প্রতিবেশী পুলিশকে জানান, রাখিদের ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে আটকে পালায় পিন্টু। পরে দরজা ধাক্কাধাক্কি শুনে ওই প্রতিবেশী বাইরে থেকে লক খুলে দেন। তখনই রাখি রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে একতলায় নেমে আসেন।
রাখির আর এক প্রতিবেশী গায়ত্রী শাসমল জানান, বিকেলে একটি তামাটে রঙের মারুতি গাড়িকে আবাসনের সামনে রেখে দুই যুবককে ঢুকতে দেখেছিলেন তিনি। কিছু পরে দেখেন, তাঁরা গাড়ি নিয়ে বালি থানার দিকে গেল। স্থানীয় কাউন্সিলর বলরাম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আবাসনটিতে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই। আর পরিচিত বলেই ওই যুবককে রাখি ঢুকতে দিয়েছিলেন। কিন্তু দিনের আলোয় জি টি রোডে এমন কাণ্ড খুবই চিন্তার।’’