প্রতীকী ছবি।
শিল্পীর কাছে বায়না দেওয়া হয়ে গেছে প্রতিমার। সম্পূর্ণ হয়ে গেছে পুজোর চার দিনের অনুষ্ঠান, খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা। এমনকি, শুরু হয়ে গেছে নাটকের মহড়াও। অন্য বছর এই সময়ে শহরের আবাসনগুলিতে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতির ছবিটা থাকে এমনই। করোনা অতিমারির জেরে অবশ্য পরিকল্পনা দূর অস্ত্, বেশির ভাগ জায়গায় পুজো আদৌ হবে কি না, ঠিক হয়নি সেটাই। অনেক আবাসনের তরফেই জানানো হচ্ছে, নিয়মরক্ষার মতো করে পুজো হবে।
রুবি মোড়ের কাছে একটি আবাসনের পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা জানালেন, ছোট করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো হবে। সৌভিক মল্লিক নামে ওই কর্তা বলেন, ‘‘পুজো হবে। তবে ঠিক হয়েছে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে খাওয়াদাওয়া সব বাদ। প্রসাদে কাটা ফল থাকবে না। এমনকি, অঞ্জলি দেওয়ার সময়েও ভিড় করা যাবে না। অঞ্জলি দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে অনেক দফায়।’’ তিনি জানান, সরকারি কোনও নির্দেশ এলে তা পালন করা হবে।
ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্সের একটি আবাসনের বাসিন্দা রঙ্গন কোলে জানান, প্রতিবার তাঁরা ১৫ অগস্টে প্রতিমার বায়না দেন। চাঁদা তোলাও শুরু হয়ে যায়। এ বার পুজো হবে কি না, তা নিয়ে আবাসিকেরা বৈঠক করছেন। শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পুজো হলেও তা ছোট করে হবে বলে জানান রঙ্গনবাবু।
পুজো হবে কি না, তা নিয়ে আবাসিকদের মতামত নিচ্ছে গড়িয়াহাটের একটি আবাসনও। এক বাসিন্দা অমিত বসু জানান, অধিকাংশ আবাসিকেরা যদি পক্ষে মত দেন, তবেই পুজো হবে। সরকারি নির্দেশও সে ক্ষেত্রে মেনে চলা হবে।
প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি আবাসনের এক কর্মকর্তা এম ভি বিজু বলেন, ‘‘পুজো হবে ঠিক হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে হবে, তা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা হয়নি। তবে বাজেট এ বার বেশ কম থাকবে এটা নিশ্চিত। পুজো তো অক্টোবরের শেষে। তত দিনে পরিস্থিতি কেমন হবে, রাজ্য সরকার পুজো নিয়ে কী নির্দেশ দেবে, কিছুই জানি না।’’ তবে তাঁদের আশা, অক্টোবরের শেষে করোনার দাপট হয়তো কমবে।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি আবাসনের এক বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা বাগ জানান, তাঁদের আবাসনে পুজো হবে ঠিক হলেও বাদ পড়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর এর জন্যই মন খারাপ সেখানকার খুদে বাসিন্দাদের।
ভিআইপি রোডের কৈখালি এলাকার একটি আবাসনের এক কর্মকর্তা বিমলেন্দু দাশগুপ্ত জানান, ‘‘পুজো হবে কি না, তা নিয়ে আবাসনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিতর্ক চলছেই। এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। তিনি জানান, অনেক আবাসিক প্রতিমা না এনে ঘট পুজোর কথা বলেছেন। কেউ কেউ আবার বলেছেন, মণ্ডপ না করে গ্যারাজেই ছোটো করে পুজো করতে। পুরোটাই এখন অনিশ্চিত।’’
যশোর রোডের কাছে একটি আবাসনের কর্মকর্তা সমীরবরণ সাহা জানান, তাঁরা পুজো করবেন। আবাসনে অনেকটা জায়গা থাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কিছু অনুষ্ঠানও হবে বলে এখনও পর্যন্ত ঠিক করা হয়েছে।