নতুন বছরের গোড়াতেই শুরু হতে চলেছে হাওড়া স্টেশন চত্বর উন্নয়নের কাজ। প্রাথমিক ভাবে এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। হাওড়া পুরসভার তৈরি করা স্টেশন চত্বর উন্নয়ন প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট (ডিটেল্ড প্রোজেক্ট রিপোর্ট বা ডিপিআর) দেখার পরে রাজ্য সরকার তাদেরকেই এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব দিয়েছে। আপাতত ঠিক হয়েছে, প্রথমে স্টেশন চত্বরের পরিবহণ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজা হবে।
বিষয়টি নিয়ে সোমবার পরিবহণ ভবনে হাওড়ার পুরকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয় রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। পরে মেয়র রথীন চক্রবর্তী জানান, প্রকল্পের কাজ শুরু ব্যাপারে রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন মিলেছে। জানুয়ারি থেকেই কাজ শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে হাওড়া স্টেশনের দিকে তৈরি হবে অত্যাধুনিক বহুতল বাস টার্মিনাস। পরে ধাপে ধাপে বাকি কাজ হবে। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারী, মেয়র পারিষদ গৌতম চৌধুরী ও বরো চেয়ারম্যান সৈকত চৌধুরী।
হাওড়া স্টেশন এলাকা উন্নয়নের জন্য বছর দুই আগে হাওড়া পুরসভা একটি প্রকল্প-রিপোর্ট তৈরি করে। তার মধ্যে ছিল আধুনিক মানের বহুতল বাস টার্মিনাস, স্কাই ওয়াক-সহ মাছবাজার আর সব্জিবাজারের জায়গায় বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা। পাশাপাশি, হাওড়া স্টেশন থেকে বেরিয়েই যাতে গঙ্গা চোখে পড়ে, সে জন্য গঙ্গাতীরের সৌন্দর্যায়ন এবং ওই জায়গায় থাকা হোটেলগুলি উচ্ছেদ করারও পরিকল্পনা করা হয়। মোট ব্যয় ধরা হয় ১৩২ কোটি টাকা।
পুরসভা সূত্রে খবর, তৃণমূল সরকার যেহেতু উচ্ছেদের বিরুদ্ধে, তাই প্রাথমিক ভাবে গঙ্গার ধার থেকে হোটেল উচ্ছেদের পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়। স্থগিত রাখা হয় মাছবাজার ও সব্জিবাজার উচ্ছেদের পরিকল্পনাও। প্রথম পর্যায়ে পরিবহণ দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্টেশন চত্বরের পরিবহণ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে। গত দু’বছর ধরে প্রকল্পটি আটকে থাকার পরে এ দিন পরিবহণ ভবনে হাওড়া পুরসভাকে নিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী শুভেন্দুবাবু। এর পরেই কলকাতা বাসস্ট্যান্ডের দিকে একটি বহুতল বাস টার্মিনাস তৈরি দায়িত্ব দেওয়া হয় পুরসভাকে।
মেয়র রথীনবাবু জানান, বাস টার্মিনাসটি তৈরির জন্য দেড় বছর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘বহুতল বাস টার্মিনাস তৈরির মূল উদ্দেশ্য উন্নত যাত্রী পরিষেবা দেওয়া। পাশাপাশি টার্মিনাসটিকে যাতে বাণিজ্যিক ভাবেও ব্যবহার করা যায়, সে জন্য এখানে থাকবে বিনোদন কেন্দ্র এবং ফুড কোর্ট।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার দিকে বাস টার্মিনাসটি তৈরির পরে হাওড়ার দিকেও একটি বহুতল বাস টার্মিনাস তৈরির পরিকল্পনা আছে।