বাজার আগুন, মুখরক্ষায় শুধুই খিচুড়ি

অসময়ের বৃষ্টি, শীত আর কুয়াশায় মার খেয়েছে রাজ্যের ফুল, ফল, আনাজ চাষ। হু হু করে দাম চড়েছে। স্কুল, কলেজ, বাড়ির পুজো – সর্বত্রই ফুল, ফল আর আনাজের পরিমাণ নামমাত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৭
Share:

সার বেঁধে, পাত পেড়ে, সরস্বতী পুজোর খিচুড়ি-ভোজ। ফাইল চিত্র

পলাশ বনে আগুন লাগার আগেই ফুল, ফল ও আনাজের দাম আগুন। সেই আঁচে সরস্বতী পুজোর বাজেটেও টান পড়েছে। প্রসাদে ফল কম। লাবড়াও বাদ পড়েছে। মুখ বাঁচাতে খিচুড়িই ভরসা।

Advertisement

অসময়ের বৃষ্টি, শীত আর কুয়াশায় মার খেয়েছে রাজ্যের ফুল, ফল, আনাজ চাষ। হু হু করে দাম চড়েছে। স্কুল, কলেজ, বাড়ির পুজো – সর্বত্রই ফুল, ফল আর আনাজের পরিমাণ নামমাত্র। অনেক জায়গায় বেলপাতায় পুষ্পাঞ্জলি আর লাবড়া ছাড়া খিচুরি ভোগেই সাঙ্গ হয়েছে পুজো।

সোমবার বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেল, গত তিন দিন ধরে প্রতিদিনই কেজি প্রতি গড়ে ১০ টাকা করে ফলের দাম বেড়েছে। শুক্রবার আপেল কেজি প্রতি গড়ে ১০০ টাকায় বিকোলেও রবি ও সোমবার বিক্রি হয়েছে ১২০-২০০ টাকায়। শসা গড়ে ৪৫ থেকে ৬০ টাকা, কমলালেবুর জোড়া ৩০-৪০ টাকায় এবং কুল ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

Advertisement

রবি-সোমবার আনাজের দামও ছিল চড়া। বেগুন কেজি প্রতি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে তিন দিনেই ৮০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, ফুলকপি ও কড়াইশুটিও বিক্রি হয়েছে চড়া দামে। পঞ্চমীর পূজা শেষ হতেই বাংলার ঘরে ঘরে ‘গোটা সেদ্ধ’ খাওয়ার রেওয়াজ আছে। পাঁচ রকম গোটা আনাজ সেদ্ধ করে রাত থেকে পর দিন পর্যন্ত আত্মীয়-পরিজনের মধ্যে দেওয়া নেওয়া চলে। এ বার তাতেও টান পড়ার আশঙ্কা।

বাজার আগুন হওয়ায় গৃহস্থের পাশাপাশি সমস্যায় পড়েছে স্কুলগুলিও।

দেগঙ্গা আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরূপকুমার মৈত্র বলেন, ‘‘ফল, ফুলের পাশাপাশি অস্বাভাবিক দাম আনাজের। বাধ্য হয়ে পুজোর আড়ম্বর ছেঁটেছি।’’ পুজোর দিনে ছাত্রছাত্রীদের কিছু পদ কম খাওয়াতে হয়েছে বলে জানান সোদপুরের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র কলেজের উপাচার্য শক্তিব্রত ভৌমিক। একই সুরে বেড়াচাঁপা দেউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘স্কুলে ১৭০০ জন ছাত্রছাত্রী। খিচুড়ি, লাবড়া বাদ দিয়ে লুচি, আলুর দম করতে হয়েছে। কাটছাঁট করেও বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে টাকা দিতে হবে।’’

চাহিদা ও সরবরাহের অঙ্কে নাজেহাল ব্যবসায়ীরাও। বারাসতের ফুল ব্যবসায়ী তাপস রায় বলেন, ‘‘প্রচুর গাঁদা, দোপাটি, রজনীগন্ধা ফুল নষ্ট হয়েছে। যেটুকু ফলন হয়েছে, চাহিদা তার থেকে অনেক বেশি। তাই গত বছরের তুলনায় এ বার ফুল দু’তিনগুণ দামেও বিক্রি হয়েছে।’’ ফল ব্যবসায়ী আব্দুল সিরাজ বলেন, ‘‘সরস্বতী পুজোর আগে থেকেই পাইকারি বাজারে ফলের দাম গড়ে ২০-৩০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। বেশি দামে কিনতে হয়েছে। লাভ না রেখে তো বেচতে পারি না।’’

তবে কিছু দিনের মধ্যেই বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের দাবি, আবহাওয়া স্বাভাবিক হচ্ছে বলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন