গুরুতর অসুস্থ আরও দুই অনশনরত পড়ুয়া

কলেজ সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে অনিকেত চট্টোপাধ্যায় নামে এক ছাত্রের বুধবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁর শরীরে জলের পরিমাণ বেশ কমে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০২:৫৯
Share:

অব্যাহত: এখনও চলছে পড়ুয়াদের অনশন। বুধবার, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অনশনরত দুই পড়ুয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। এক জনের প্রস্রাবে মিলেছে কিটোন বডি। অন্য জনের শরীরে জলের মাত্রা কমছে। অন্য দু’জনের রক্তচাপ দ্রুত ওঠা-নামা করছে। তবুও হাসপাতালে ভর্তি হতে নারাজ ওঁরা।

Advertisement

সপ্তাহখানেক ধরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই অনশন চালাচ্ছেন তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ারা। কলেজ সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে অনিকেত চট্টোপাধ্যায় নামে এক ছাত্রের বুধবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁর শরীরে জলের পরিমাণ বেশ কমে গিয়েছে। অন্য অনশনকারী সুমিত ধাড়ার শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। শরীরে জল কমার পাশাপাশি তাঁর প্রস্রাবে কিটোন বডি মিলেছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন না খাওয়ার জেরে শরীরের ফ্যাট ভাঙছে। যার ফলে ওই পড়ুয়ার প্রস্রাবে কিটোন বডি মিলেছে এবং রক্তে অ্যাসিডের মাত্রাও বেড়ে গিয়েছে। এ দিন সকালে অনশনকারীদের শারীরিক পরীক্ষা করতে এক চিকিৎসক দল যায়। দলের সদস্যেরা তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুরোধ জানালেও পড়ুয়ারা রাজি হননি।

চিকিৎসক মহলের প্রশ্ন, ছাত্রদের সঙ্কটজনক শারীরিক অবস্থা সত্ত্বেও কেন অনমনীয় কর্তৃপক্ষ? বড় বিপদ ঘটলে দায় কে নেবেন? যদিও হাসপাতালের তরফে কোনও উত্তর মেলেনি। এ দিকে হাসপাতালের অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্র মঙ্গলবার বিকেলেই এসএসকেএমের আইটিইউ-তে ভর্তি হয়েছেন। এসএসকেএম সূত্রের খবর, এ দিন তাঁর শারীরিক অবস্থার
উন্নতি হয়েছে।

Advertisement

এ দিন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, হস্টেল নিয়ে কর্তৃপক্ষ বুধবার রাতের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্তে না পৌঁছলে আরও দশ জন পড়ুয়া অনশনে বসবেন। বৃহস্পতিবারের মধ্যে হস্টেল সমস্যার সমাধান না হলে জুনিয়র চিকিৎসকেরা কাজ বন্ধ করে দেবেন। অভিযোগ, অধিকাংশ পড়ুয়া হস্টেলের আবেদন করলেও তাঁদের ঘর নির্ধারণ করা হয়নি। বারান্দায় থেকে পড়াশোনা চালাতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। পুরনো হস্টেলের অবস্থাও শোচনীয়। এমনকি দু’বার হস্টেলের কয়েকটি ঘরের ছাদের একাংশ ভেঙে পড়েছে বলেও অভিযোগ। ইতিমধ্যে ছাত্রদের জন্য নতুন ভবন তৈরি হয়েছে। সেই হস্টেলে শুধু এমবিবিএস প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ঘর নির্ধারিত হচ্ছে। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের পাশাপাশি তাঁদেরও সেখানে ঘর দেওয়া হোক।

এই দাবি নিয়েই সপ্তাহ খানেক আগে অধ্যক্ষকে ঘেরাও কর্মসূচি চালানোর সময়ে কলেজ ক্যাম্পাসে রাতে পুলিশ ঢোকে। অভিযোগ, পুলিশ দিয়ে পড়ুয়াদের হেনস্থা করা হয়। তারই প্রতিবাদে এবং হস্টেলের দাবি নিয়ে অনশনে বসেন ছ’জন পড়ুয়া। গত শনিবারই দুই পড়ুয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। আরও দুই পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন