—ফাইল চিত্র।
রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রতিষ্ঠানে জমে থাকা জল ও জঞ্জালের কারণে মশার বংশবৃদ্ধি ঘটলে সেই প্রতিষ্ঠানকে নোটিস ধরাবে কলকাতা পুরসভা। মঙ্গলবার পুরভবনে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেখানে রাজ্য সরকারের সেচ ও পূর্ত দফতর ছাড়াও রেল, বন্দর এবং কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর (সিপিডব্লিউডি)-এর প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। বৈঠকে মেয়র জানিয়ে দেন, পুর প্রশাসন এক দায়িত্বশীল সংস্থা। তাই এক জনের ভুলে যদি ১০০ জনের জীবন বিপন্ন হয়, তা কখনওই বরদাস্ত করা হবে না।
মশাবাহিত রোগের ক্ষেত্রে গত বছর শহরের যে ২০টি ওয়ার্ড পুর প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়েছিল, এ বার সেই ওয়ার্ডগুলিকেই পাখির চোখ করে কাজ শুরু করেছে পুরসভা। এ দিন সেই সব ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং বরো চেয়ারম্যানদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল বৈঠকে। কার কী অভিযোগ, জানতে চাওয়া হলে ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্র তাঁর এলাকায় থাকা মণি খাল, বেগোর খাল এবং সিপিটি ক্যানালের জলে ময়লা ও প্লাস্টিক পড়ে থাকার কথা জানান। যার জেরে জলের গতি রুদ্ধ হয়ে মশার বংশবৃদ্ধি ঘটছে বলে জানান তিনি। ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস জানান, আলিপুর আদালত, আলিপুর থানা, ভবানী ভবন-সহ একাধিক চত্বরে ময়লা জমে থাকে। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় তা থেকে মশা বাড়ছে। মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় জানান, ঢাকুরিয়া, বালিগঞ্জ স্টেশন চত্বর, রেললাইন সংলগ্ন পথ জঞ্জালে ভরে থাকে। তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউত বলেন, ‘‘উল্টোডাঙায় বেশ কিছু নির্মাণস্থলে জল ও জঞ্জাল জমে থাকায় মশা জন্মায়।’’ বৈঠকে মেয়র নির্দেশ দেন, ‘‘সব অভিযোগ লিখে রাখুন। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ পরে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি নবান্নে ডেঙ্গি নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলেন। সেখানেই তিনি এ বিষয়ে পুরসভাকে আরও কঠোর হতে নির্দেশ দেন।
ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘মশাবাহিত রোগ দমনে নতুন আইন ৪৯৬-এ তৈরি করেছে পুরসভা। তাতে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে।’’ সেই আইনের কথা তুলে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘প্রথমে অনুরোধ করা হবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে জমে থাকা জল, জঞ্জাল পরিষ্কার করার জন্য। তাতে কাজ না হলে আইনের সহায়তা নিয়ে টেনে আনা হবে আদালতে।’’
পাড়ায় পাড়ায় যে ক্লাব রয়েছে, তাদেরও জমা জল ও জঞ্জাল পরিষ্কারের কাজে যুক্ত হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মেয়র। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাগুলির উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য, ‘‘নিজেদের প্রতিষ্ঠানের কোথাও জল, জঞ্জাল জমতে দেবেন না। মশাবাহিত রোগ দমনে পুরসভার সঙ্গে থাকুন।’’ প্রয়োজনে রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে বৈঠক করে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে রাজ্য ও কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠানগুলিকে সতর্ক করা হবে বলে জানান তিনি।