ট্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র। নিজস্ব চিত্র
তিলজলার পরে শিয়ালদহ! মহানগরে ফের খোঁজ মিলল বেআইনি অস্ত্রের। তবে মঙ্গলবার রাতে শিয়ালদহ স্টেশনের ওই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে তারা ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো নামখানা লোকালের মহিলা কামরা থেকে ২২টি পিস্তলের খোল এবং ২২টি নল উদ্ধার করে। পরে সেগুলি রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কোথা থেকে, কী ভাবে এই অস্ত্র এল তা নিয়ে তদন্ত চলছে।
সম্প্রতি তিলজলায় হানা দিয়ে অস্ত্র কারখানার হদিস মিলেছিল। সেটির সঙ্গে জড়িত ছিল রবীন্দ্রনগরের আর একটি অস্ত্র কারখানাও। মঙ্গলবার উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলির সঙ্গে সেই সব কারখানা বা অস্ত্র ব্যবসা চক্রের যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ ডিভিশনে মাদক পাচার রুখতে আরপিএফের বিশেষ দল রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে সেই দলের সাব-ইনস্পেক্টর মহম্মদ এম আলি এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর এ রসুলের নেতৃত্বে নামখানা লোকালে তল্লাশি চলছিল। তখনই কামরার তাকে রাখা একটি ব্যাগ নজরে আসে। যাত্রীদের কেউই ব্যাগটি নিজের বলে দাবি করেননি। সন্দেহ হওয়ায় চেন খোলা হয়। প্রথমে কিছু কাপড়চোপড় মেলে। তার তলাতেই অস্ত্রগুলি লুকনো ছিল বলে আরপিএফ সূত্রের খবর। রেল পুলিশের এক কর্তা জানান, আরপিএফ ও জিআরপি তদন্ত করছে। অস্ত্র উদ্ধারের কথা লালবাজার এবং সিআইডিকেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ থেকে আত্মহত্যা, সবই খেলায়
বিভিন্ন সময়ে রাজ্যে অস্ত্রের কারবার বেড়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পুলিশকর্তারা। তা নিয়ে একাধিক বার অভিযানও হয়েছে। গত বছর দক্ষিণ শহরতলির রবীন্দ্রনগরে হানা দিয়ে অস্ত্র ব্যবসার একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত মাসে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তিলজলার একটি বাড়িতে হানা দিয়ে অস্ত্র কারখানার হদিস মেলে। ফের উঠে আসে রবীন্দ্রনগরের আর একটি অস্ত্র কারখানার কথা। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, তিলজলায় অস্ত্র তৈরির প্রাথমিক কাজ হতো। তার পর সেটিকে ‘ফিনিশিং টাচ’ দিতে অর্থাৎ ব্যবহার যোগ্য করে তোলার জন্য পাঠানো হতো রবীন্দ্রনগরে। মঙ্গলবারের তল্লাশিতেও অসম্পূর্ণ অস্ত্র মিলেছে। ফলে তদন্তকারীদের অনুমান, সেগুলি কোথাও ‘ফিনিশিং টাচ’ দিতে পাঠানো হচ্ছিল।
গোয়েন্দাদের একাংশ বলছেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে অস্ত্র শহরে ঢুকছিল নাকি শহর থেকে অস্ত্র পাচার হচ্ছিল, তা স্পষ্ট হয়নি। শিয়ালদহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে কেউ ওই ব্যাগ রেখেছিলেন কি না, তা বোঝার জন্য সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হচ্ছে।