প্রতারণার তদন্তে হদিস বেআইনি লটারি চক্রের

পুলিশ জানিয়েছে, বারাণসীর বাসিন্দা এক তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে হেমন্তকুমার মৌর্য নামে এক যুবককে খুঁজছিল নিউ আলিপুর থানা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রেমের প্রতারণার অভিযোগের তদন্ত শুরু করে পুলিশ হদিস পেল বেআইনি লটারি চক্রের।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বারাণসীর বাসিন্দা এক তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে হেমন্তকুমার মৌর্য নামে এক যুবককে খুঁজছিল নিউ আলিপুর থানা। সোমবার সকালে হেমন্ত-সহ তার দুই সঙ্গী সুব্রতকুমার মিত্র এবং মহম্মদ আক্রমকে পাকড়াও করে পুলিশ। ঝাড়খণ্ডের গিরিডি থেকে সুব্রত ওরফে রাকেশ পণ্ডিত এবং উত্তর প্রদেশের বারাণসী থেকে হেমন্তকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার তাঁদের কলকাতায় নিয়ে আসে পুলিশ। কলকাতা থেকে ধরা হয় আক্রমকে। পুলিশের দাবি, ওই তিন জনকে জেরা করে নিউ আলিপুর থানা দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিরাকোল থেকে মঙ্গলবারই গ্রেফতার করেছে সাট্টা-মটকা চক্রের তিন সদস্যকেও। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অভিযুক্তদের তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। ৩০টি মোবাইল এবং ১৪ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, ১৮ অগষ্ট বারাণসীর বাসিন্দা ওই তরুণী নিউ আলিপুর থানায় এসে অভিযোগ করেন। তিনি পুলিশকে জানান, বারাণসীরই বাসিন্দা হেমন্তের সঙ্গে একই কলেজের পড়ার সুবাদে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০১৭ সাল থেকে নিউ আলিপুরের একটি মেসে থাকতেন হেমন্ত। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি কিংবা ব্যবসার নামে তাঁদের থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। তাঁর পরে বিয়ের কথা বলতেই যোগাযোগ বন্ধ করে দেন হেমন্ত। তরুণীর অভিযোগ, হেমন্তের বন্ধু পরিচয় দিয়ে সুব্রত ফোন করে হুমকি দিতেন। তদন্ত শুরু করে হেমন্তের মোবাইল ফোন বন্ধ পায় পুলিশ।

Advertisement

তদন্তকারীরা জানান, অনলাইনে দু’টি অ্যাকাউন্টে পাঁচ লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছিল। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সেই দু’টি অ্যাকাউন্টের খতিয়ে দেখে পুলিশ রাজারহাট-গোপালপুরের বাসিন্দা মহম্মদ আক্রামের হদিস পায়। পুলিশ জানে অ্যাকাউন্টগুলিতে শুধুমাত্র ই-ওয়ালেটে এবং অন্য ডিজিটাল মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়েছে। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ সুব্রত মিত্রের নাম জানে। তাঁর এক আত্মীয়কে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে সুব্রত মিত্রই আসলে রাকেশ পণ্ডিত। ফোনের সূত্র ধরে গিরিডির একটি ধর্মশালাতে রাকেশের খোঁজ পায় পুলিশ। তাঁকে জেরা করেই বারাণসীতে খোঁজ মেলে হেমন্তের। বারাণসী স্টেশনের বাইরে থেকে পুলিশ হেমন্তকে ধরে।

লালবাজারের দাবি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে শুধুমাত্র ডিজিটাল লেনদেনের কারণ নিয়ে ধৃতদের জেরা করতেই ওই বেআইনি লটারির সন্ধান মেলে। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে লটারি খেলা হত। প্রথমে ক্রেতাকে নিজের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত পাঠাতে হত চক্রের সদস্যদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে। এর পরেই একটি ওয়েব সাইটের লিঙ্ক পাঠানো হত তাঁদের তরফে। ক্রেতা কোন নম্বরে খেলবে তা ওই চক্রের সদস্যদের দেওয়া মোবাইল জানিয়ে দিতে হত। সঙ্গে নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে অনলাইনে ফেলতে হত টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন