নির্মাণ সামগ্রী ও বেআইনি পার্কিংয়ে নাকাল পথচারীরা

অভিযোগ, পুলিশ, প্রশাসন কিংবা পুরসভা এ সব দেখেও দেখে না। বরং এলাকায় কান পাতলে এ সব কাজে তাদের মদতের অভিযোগই শোনা যায়। যে কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা তো দূর, রাস্তা জবরদখল হয়ে থাকায় গাড়ির গতিও ধীর হয়ে যায়।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৫২
Share:

বিপজ্জনক: এক দিকে পাথরকুচি, অন্য দিকে যানবাহন। তার মধ্যে দিয়েই ঝুঁকির যাতায়াত বাসিন্দাদের। বুধবার, দমদম রোডে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

রাস্তার পাশে তৈরি হচ্ছে আবাসন। সেই কাজের জন্য টিলার মতো করে বালি, পাথরকুচি ফেলে রাখা রয়েছে রাস্তায়। থরে থরে ইট সাজিয়ে প্রাচীর তৈরি হয়ে রয়েছে সেই পথের ধারেই। অলি-গলি তো বটেই, একই ছবি সদর রাস্তায় এমনকি জাতীয় সড়কেও।

Advertisement

অভিযোগ, পুলিশ, প্রশাসন কিংবা পুরসভা এ সব দেখেও দেখে না। বরং এলাকায় কান পাতলে এ সব কাজে তাদের মদতের অভিযোগই শোনা যায়। যে কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা তো দূর, রাস্তা জবরদখল হয়ে থাকায় গাড়ির গতিও ধীর হয়ে যায়। প্রতিদিন লেগেই থাকে যানজট। দমদম, এয়ারপোর্ট, মধ্যমগ্রাম, বারাসত সর্বত্র এ ভাবেই রাস্তা হারিয়ে গিয়েছে নির্মাণ সামগ্রীর আড়ালে।

দমদম রোডের কথাই ধরা যাক। দমদম স্টেশন থেকে নাগেরবাজারের দিকে যেতে দেড় কিলোমিটার পথ পার হতে কত ক্ষণ লাগবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এমনিতেই রাস্তার দু’ধারের ফুটপাত দখল হয়ে গিয়েছে বেআইনি দোকান-বাজারে। পুর বোর্ডের পালা বদলায়। কিন্তু প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও হকারমুক্ত ফুটপাত ফিরিয়ে দিতে পারে না প্রশাসন। অগত্যা ঝুঁকি নিয়েই গাড়িকে পাশ কাটিয়ে হাঁটছেন পথচারীরা। রাস্তার দু’পাশে বেআইনি ভাবে রাখা থাকে বাস, মিনিবাস, ছোট গাড়ি। মঙ্গলবার দেখা গেল, অন্তত পাঁচটি জায়গায় ওই রাস্তার উপরে ফেলে রাখা রয়েছে পাথর। রাস্তার ধারে ডাঁই করে রাখা ইট।

Advertisement

এমনিতেই ট্রেন এবং মেট্রোরেলের কারণে সব সময়ে ব্যস্ত থাকে দমদম রোড। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, চওড়া রাস্তাটি এ সবের কারণে সরু হয়ে গিয়ে প্রতিদিন ব্যস্ত সময়ে যানজটে জেরবার হচ্ছে। দমদম রোডের উপরেই রয়েছে একাধিক স্কুল। এক স্কুলগাড়ির চালক জানাচ্ছেন, রাস্তার ধারের নির্মাণসামগ্রী এবং বেআইনি পার্কিংয়ের কারণে প্রতিদিন যানজটে পড়ে পড়ুয়ারা। অনেক আগে বেরিয়েও প্রায় দিনই স্কুলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায় ওদের।

দমদম রোড সংলগ্ন দু’পাশের গলির অবস্থা আরও ভয়ানক। ছোট গলিগুলিও ইট, পাথর ফেলে দখল হয়ে থাকে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার অবশ্য দাবি, মাঝেমধ্যে হানা দিয়ে বেআইনি পার্কিং সরানো হয় এবং নির্মাণসামগ্রী যাঁরা রাস্তায় রাখেন, তাঁদেরও ধরা হয়। একই কথা জানিয়ে ব্যারাকপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (জোন ২) আনন্দ রায় বলেন, ‘‘কোথায় কোথায় এমন ঘটনা ঘটছে দ্রুত দেখা হচ্ছে।’’

তবে শুধু ওই রাস্তাই নয়, বেলগাছিয়ার দিক থেকে বিমানবন্দর ছাড়িয়ে বারাসত পর্যন্ত যেতেও দেখা যাবে এই ছবি― রাস্তার উপরে ছোট টিলার মতো স্তূপ করে রাখা ইট, পাথরকুচি, বালি আর বেআইনি পার্কিংয়ের দখলদারি। এমনকি, যশোর রোড, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশাপাশি টাকি রোড, বাদু রোড, ব্যারাকপুর রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তাও নির্মাণসামগ্রীতে দখল হয়ে রয়েছে। পুর এলাকাগুলির ভিতরের রাস্তাও চলে গিয়েছ স্থানীয় প্রোমোটারের দখলে।

যদিও এ ব্যাপারে বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তা তৈরি বা মেরামত করার সরকারি কাজ ছাড়া মালপত্র এ ভাবে রাখার নিয়ম নেই। কারা এ ভাবে নির্মাণসামগ্রী রাখছেন, তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন