বেআইনি মদ তৈরির নয়া পন্থা, ধৃত ১

বেআইনি ভাবে মদ তৈরির নিত্য-নতুন পন্থা বার করছে বেআইনি মদের কারবারিরা। এ বার হোমিওপ্যাথি ওষুধের শিশির ভিতরে পাওয়া গেল মদ তৈরির মূল উপাদান ‘র’ স্পিরিট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪৬
Share:

বাজেয়াপ্ত স্পিরিটের বোতল। ফাইল চিত্র

বেআইনি ভাবে মদ তৈরির নিত্য-নতুন পন্থা বার করছে বেআইনি মদের কারবারিরা। এ বার হোমিওপ্যাথি ওষুধের শিশির ভিতরে পাওয়া গেল মদ তৈরির মূল উপাদান ‘র’ স্পিরিট।

Advertisement

গত দু’দিনে অভিযান চালিয়ে মুচিপাড়া থানার বৌবাজার থেকে ছোট ছোট ৪৫০ মিলিলিটার বোতলে মোট ৩০০ লিটার ‘র’ স্পিরিট বাজেয়াপ্ত করেছে রাজ্য আবগারি দফতর। দফতরের কলকাতার কালেক্টর সুব্রত বিশ্বাস জানিয়েছেন, ওই স্পিরিট হোমিওপ্যাথি ওষুধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলে তার বাজারদর হতো ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। আর তা বেআইনি মদ তৈরিতে ব্যবহার করলে বাজারদর বেড়ে দাঁড়াত ২ লক্ষ টাকা। ওই স্পিরিট সরবরাহ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অশোক দে নামে এক ব্যক্তিকে। তিনি এখন জেল হাজতে রয়েছেন।

বাজেয়াপ্ত বোতল পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, ওই স্পিরিট পাঠানো হচ্ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরে। সেই সংগ্রামপুর, যেখানে ২০১১ সালে বিষমদ খেয়ে মারা গিয়েছিলেন ১৭২ জন। আবগারি অফিসারেরা জানিয়েছেন, ‘র’ স্পিরিট থেকে বেআইনি ভাবে যে মদ তৈরি হয়, সেখানে সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে হিসেবের ভুলচুক হলে বিষাক্ত হয়ে যায় মদ। কখনও ওই স্পিরিটের সঙ্গে বিষাক্ত রাসায়নিকও মেশানো হয়। তা খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা এ রাজ্যে কম ঘটেনি।

Advertisement

সুব্রতবাবু জানিয়েছেন, কয়েক দিন যাবৎ বেআইনি মদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সময়ে ৪৫০ মিলিলিটারের ছোট ছোট বোতল পাওয়া যাচ্ছিল। এই বোতল মূলত হোমিওপ্যাথি ওষুধের স্পিরিট রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। তখনই সন্দেহ দানা বাঁধে, হোমিওপ্যাথি ওষুধের জন্য তৈরি স্পিরিট বেআইনি ভাবে মদ বানানোর জন্য দালালদের মাধ্যমে বাজারে চলে যাচ্ছে। যদিও এর আগে সেই সব বোতলে লেবেল সাঁটা ছিল না। কিন্তু গত দু’দিনে বাজেয়াপ্ত হওয়া বোতলগুলিতে লেবেল সাঁটা ছিল।

সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘হোমিওপ্যাথি ওষুধের জন্য যাঁরা এই স্পিরিট বানান বা পাইকারি ব্যবসা করেন, তাঁদের বাধ্যতামূলক ভাবে ড্রাগ এবং আবগারি লাইসেন্স রাখতে হয়। ওই স্পিরিট সরবরাহ করা হয় ওষুধের খুচরো বিক্রেতা এবং বেশ কিছু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের।’’

আবগারি দফতর সূত্রের খবর, ধৃত অশোক পাইকারি ব্যবসায়ী বা প্রস্তুতকারক — কোনওটাই নন। তিনি আদতে ৪৫০ মিলিলিটার বোতল সরবরাহ করেন। তাঁর স্পিরিট রাখার বা সরবরাহ করার লাইসেন্সও নেই। অশোক জেরায় জানিয়েছেন, অন্য এক ব্যক্তি তাঁকে ওই সিল করা স্পিরিট পাঠাতেন এবং তিনি গাড়িতে তুলে তা বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন। বেআইনি ওই মদ ব্যবসায়ীর খোঁজ শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন