আলিপুরকাণ্ডের তদন্তে ভোলা সিংহ এবং পূজা রায়ের বাড়িতে পুলিশ। চলছে সুরঞ্জনা মৃত্যুর তদন্ত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আলিপুরে বাড়ির আলমারি থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতার বাবা ভোলা সিংহ এবং সৎমা পূজা রায়কে থানায় নিয়ে গেল পুলিশ। অন্য দিকে, বছর দশেকের সঞ্জনা সিংহের দেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও হাতে পেয়েছে পুলিশ। তাতে আত্মহত্যার আভাস মিলেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, আলমারিতে একটি হ্যাঙ্গারে আংশিক ভাবে (পার্শিয়ালি হ্যাঙ্গিং) ঝুলছিল তার দেহটি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত সঞ্জয় রায়ের ভাগ্নি ছিল সঞ্জনা। প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়ের বড়দি ববিতা রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল আলিপুর থানার বিদ্যাসাগর কলোনির বাসিন্দা ভোলার। তাঁদের মেয়ে ছিলেন সঞ্জনা। মেয়েটি পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বছরখানেক আগে ববিতা মারা যান। তখন ভোলা তাঁর শ্যালিকা, সঞ্জয়ের ছোড়দি পূজাকে বিয়ে করেন। পূজা পেশায় কলকাতা পুলিশের কর্মী বলে জানা যাচ্ছে। ভোলা একটি নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করেন। কাজের সূত্রে প্রায়শই বাইরে থাকেন তিনি।
বুধবার দুপুরে প্রতিবেশীদের আক্রমণের মুখে পড়েও পূজা দাবি করেছেন, তিনি সৎমেয়েকে খুন করেননি। সঞ্জনা আত্মহত্যা করেছে। তিনি জানান, গত সোমবার রাতে তিনি বাড়ি ফিরে মেয়েকে দেখতে পাননি। পরে আলমারি থেকে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ পান। একই কথা বলছেন কন্যাহারা ভোলা। তাঁদের দু’জনকে আলিপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অন্য দিকে, নাবালিকার রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে আলিপুরের বিদ্যাসাগর কলোনি এলাকায় উত্তেজনা তুঙ্গে। প্রতিবেশীদের দাবি, বাড়ির কর্তা ভোলা বৃদ্ধা মাকে মারধর করতেন। কন্যাকে শাসনের নামে অত্যাচার করতেন। একই ভাবে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী-ও সৎমেয়েকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নিগ্রহ করতেন। দম্পতির শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা। তা ছাড়া, তাঁদের পাড়াছাড়া করার জন্য সই সংগ্রহে নেমে পড়েছেন স্থানীয়দের একাংশ। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার তত্ত্বই উঠে আসছে। সেটা হলে কেন দশ বছরের মেয়ে নিজেকে শেষ করতে গেল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, আলমারির মধ্যে একটি হ্যাঙ্গার থেকে ঝুলছিল সঞ্জনা। তার গলায় ওড়নার ফাঁস ছিল। দেহটি আংশিক ভাবে ঝুলছিল।