—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কসবার কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। পাঁচ সদস্যের ওই তদন্তকারী দলের নেতৃত্বে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষাল। ইতিমধ্যে ‘নির্যাতিতা’ এবং তাঁর বাবা-মায়ের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে সিট।
পূর্ব কলকাতার একটি আইন কলেজে আইনের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল গোটা রাজ্যে। ‘নির্যাতিতা’ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী। অভিযুক্তেরা শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের নেতা। শুক্রবার থেকে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতির আঙিনায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। পুলিশ মোট চার জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে আইন কলেজে ধর্ষণকাণ্ডে নিজস্ব অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটির সদস্যেরা শীঘ্রই এ রাজ্যে আসবেন। অন্য দিকে, কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে শাসকদল তৃণমূল। এই কমিটি বাংলায় এসে কী করবে, তা নিয়ে শনিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘কসবাকাণ্ডে অভিযুক্তদের ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে। তার মধ্যে বিজেপির এই ‘অনুসন্ধানের’ প্রয়োজনীয়তা কী?’’
‘নির্যাতিতা’ দাবি করেছেন, গত বুধবার তাঁকে ডাকা হয়েছিল কলেজের ইউনিয়ন রুমে। সেখানে ‘জে’ (অভিযুক্তদের কোডনেম ব্যবহার করা হয়েছে অভিযোগপত্রে) তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ঘটনাস্থলে ছিলেন ‘এম’ এবং ‘পি’। তিনি আরও দাবি করেছেন, মোট দু’বার তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছে। প্রথমে ইউনিয়ন রুনে এবং পরে গার্ডস রুমে। অভিযোগ, ‘জে’ তাঁকে ধর্ষণ করেন। ‘এম’ এবং ‘পি’ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছেন। কখনও ধর্ষণে সহায়তা করেছেন। ধর্ষণের সময় তাঁর বিবস্ত্র অবস্থার ভিডিয়ো করে ব্ল্যাকমেল করেছেন ‘জে’। তার পর ওই ছাত্রনেতা হুমকিও দেন যে, এ নিয়ে কাউকে কিছু বললে তাঁর পরিবারের উপরে আঘাত হানবেন। তাঁর প্রেমিককে খুন করে দেবেন। জেলে পাঠাবেন বাবা-মাকে।
গত বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রী কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরে সন্ধ্যায় দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পর গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় তৃতীয় অভিযুক্তকে। শনিবার সকালে কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতিতা জানিয়েছিলেন, ওই নিরাপত্তাকর্মী ‘অসহায় দর্শক’ ছিলেন। পুলিশের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে তাঁর বয়ান মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।