ICC ODI World Cup 2023

সকাল থেকেই জনস্রোত ইডেন চত্বরে, উৎসবের আমেজ

ইডেনে রবিবারের ম্যাচ ঘিরে আকাশছোঁয়া উন্মাদনার কিছুটা আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল কয়েক দিন ধরেই। কার্যত সেই উন্মাদনারই ঢেউ এ দিন সকাল থেকে আছড়ে পড়ল ইডেন চত্বরে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৬
Share:

উল্লাস: খেলা শুরুর আগে মাঠের বাইরে ভারতীয় সমর্থকেরা। রবিবার, ইডেন গার্ডেন্সে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

২২ গজের যুদ্ধ শুরু হতে তখনও ঘণ্টা তিনেক বাকি। ধর্মতলা থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ হয়ে গোষ্ঠ পাল সরণি ধরে চলেছে নীলের স্রোত! পায়ে পায়ে ইডেনের দিকে এগিয়ে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। ইডেনের সামনের মাঠেও একই অবস্থা। সেখানেও কার্যত তিলধারণের জায়গা নেই। তার মধ্যেই চলছে কেক নিয়ে বিরাট কোহলির জন্মদিন পালনের তোড়জোড়। পাশে রাখা বিরাটের বড় কাট-আউটের সামনে দাঁড়িয়ে চলছে নিজস্বী তোলা। বিশ্বকাপের ‘হাই-ভোল্টেজ’ ম্যাচ ঘিরে দীপাবলির এক সপ্তাহ আগে ক্রিকেটের নন্দনকানন যেন উৎসবের রঙিন মঞ্চ।

Advertisement

ইডেনে রবিবারের এই ম্যাচ ঘিরে আকাশছোঁয়া উন্মাদনার কিছুটা আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল কয়েক দিন ধরেই। কার্যত সেই উন্মাদনারই ঢেউ এ দিন সকাল থেকে আছড়ে পড়ল ইডেন চত্বরে। ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ শুরুর নির্ধারিত সময় দুপুর ২টো হলেও সকাল ১০টা থেকেই ধীরে ধীরে ভিড় জমতে থাকে ইডেন চত্বরে। এর পরে বেলা গড়াতেই ইডেন-সহ গোটা ময়দান চত্বরই চলে যেতে থাকে ভারতীয় সমর্থকদের দখলে। সঙ্গে কান ফাটানো ‘ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া’ চিৎকার। কারও কারও মুখে আবার শোনা গেল প্রিয় তারকাদের নাম ধরে স্লোগান।

কেক নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে হাতিবাগান থেকে এসেছিলেন তন্ময় নিয়োগী। কেকের উপরে বিরাটের ছবি। তন্ময় বললেন, ‘‘আজ বিরাটের জন্মদিন। ইডেনের বাইরে কেক কেটে তার পরে ভিতরে ঢুকব। আজ ওঁর একশো আটকায় কে!’’ পাশে দাঁড়ানো তাঁর এক বন্ধু বললেন, ‘‘জন্মদিনেই যদি সেঞ্চুরি হয়ে যায়, তা হলে দারুণ হবে।’’ পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন কয়েক জন। এ কথা শুনে রোহিত শর্মার জার্সি পরা ইডেনমুখী এক যুবক বললেন, ‘‘বিরাটের জন্মদিন হলেও আজ ইডেন মাতাবে‌ন রোহিত। ইডেন কখনও রোহিতকে খালি হাতে ফেরায় না।’’ মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় আবার বিরাটের একাধিক কাট-আউট দেখা যায় এ দিন। সেই কাট-আউটের সামনে নিজস্বী তুলতে তুলতেই ডোনা চক্রবর্তী নামে এক তরুণী বললেন, ‘‘বিরাট না হোক, ওঁর কাট-আউটের সঙ্গেই ছবি হয়ে যাক। ইডেনে এসেছি, বাড়ি ফিরে সকলকে দেখাতে হবে তো।’’

Advertisement

শুধু কলকাতা বা শহরতলি নয়, ভিন্ রাজ্য থেকেও এ দিন অনেকে খেলা দেখতে এসেছিলেন শহরে। দিল্লি থেকে শনিবারই শহরে এসে পৌঁছন কিরণ শর্মা। ইডেনের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘‘কলকাতায় এসেই বিকেলে ইডেন ঘুরে গিয়েছিলাম। আজ সকাল সকাল চলে এসেছি। যত ক্ষণ না স্টেডিয়ামে ঢুকছি, কিছুই ভাল লাগছে না।’’ ইডেন চত্বরে দর্শকদের উন্মাদনা যত বেড়েছে, ততই পুলিশের তৎপরতাও চোখে পড়েছে। এ দিন সকাল থেকেই গোষ্ঠ পাল সরণিতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। দর্শকদের ইডেনে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট পথের ব্যবস্থা করা হয়। রাস্তার সেই ভিড় সামলাতে সামলাতেই এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, অষ্টমীর সন্ধ্যা! সকাল থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিড় সামলাতে গিয়ে কোমরে ব্যথা হয়ে গেল।’’ পরে সেই উন্মাদনা কয়েক গুণ বেড়ে যায় বিরাটের সেঞ্চুরিতে। খেলার মাঝে ইডেনের বাইরে বেরিয়ে বাড়ির দিকে যাওয়া এক তরুণী বললেন, ‘‘জন্মদিনে বিরাটের সেঞ্চুরি দেখতে এসেছিলাম। হয়ে গিয়েছে। জেতা-হারা বাকি কিছু না দেখলেও চলবে।’’

এ দিন ম্যাচ শুরুর আগেও টিকিটের হাহাকার দেখা গিয়েছে। মুখে ভারতের পতাকা এঁকে টিকিটের খোঁজে ঘোরা এক যুবক বললেন, ‘‘দশ পর্যন্ত দিতে রাজি। শুধু একটা টিকিট চাই। কিন্তু কেউ তো টিকিটই জোগাড় করে দিচ্ছে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন