Indian Railways

চালকদের মন ভাল রাখতে পরিবারকে নিয়ে কর্মশালা রেলে

মেট্রো সূত্রের খবর, ওই কর্মশালায় মেট্রোচালকেরা ছাড়াও তাঁদের স্ত্রী-রা অংশগ্রহণ করেছিলেন। মেট্রোচালকদের স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সেখানে তাঁদের কাজের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩ ০৭:২৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ট্রেনচালকদের ক্লান্তি, অবসাদ এবং কাজের সময়ে মনঃসংযোগের অভাব— সাম্প্রতিক কালে একাধিক রেল দুর্ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে এগুলিই সামনে এসেছে। এই সমস্যা দূর করতে ট্রেনচালকদের সচেতন করার প্রক্রিয়ায় আগেই জোর দেওয়া হয়েছিল। এ বার চালকদের মন এবং শরীর ভাল রাখতে তাঁদের পরিবারের লোকজনের সাহায্য চাইল রেল। কেমন পরিবেশে মেট্রোর মোটরম্যান এবং লোকাল ট্রেনের চালকেরা কাজ করেন, তা নিয়ে তাঁদের পরিবারকে অবহিত করতে সম্প্রতি দু’টি পৃথক কর্মশালার আয়োজন করেছিল কলকাতা মেট্রো এবং পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন। গত ৭ জুলাই, শুক্রবার পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনে এবং ৯ জুলাই, রবিবার কলকাতা মেট্রোর নোয়াপাড়া কারশেডে ওই বিশেষ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

Advertisement

মেট্রো সূত্রের খবর, ওই কর্মশালায় মেট্রোচালকেরা ছাড়াও তাঁদের স্ত্রী-রা অংশগ্রহণ করেছিলেন। মেট্রোচালকদের স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সেখানে তাঁদের কাজের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করা হয়। ঠিক কোন ধরনেরপরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাত্রিবোঝাই রেক নিয়ে চালকেরা প্রতিদিন মেট্রো চালান, সে সম্পর্কেও সম্যক ধারণা দেওয়া হয় তাঁদের। চালকদের প্রশিক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট সিমুলেশন রুমে নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এ নিয়ে প্রাসঙ্গিক ভিডিয়ো দেখানো হয়। পাশাপাশি, চালকদের অভাব-অভিযোগের কথাও জানানো হয়। চালকেরা যাতে বাড়িতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পান, সে দিকে লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার দিকেও জোর দেওয়ার কথা বলেন মেট্রোর কর্তারা। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে চালকদের যোগব্যায়াম করার পরামর্শও দেওয়া হয় ওই কর্মশালায়। যে সব মেট্রোচালক খুব সকালে কাজে যোগ দেন, তাঁদের ক্ষেত্রে মোবাইল এবং সামাজিক মাধ্যমে বেশি সময় না কাটানো এবং রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, মেট্রোচালকদের স্ত্রীদের এ বিষয়ে ‘সতর্ক দৃষ্টি’ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শিয়ালদহে রেলের কর্মশালাতেও প্রায় একই কায়দায় চালক এবং তাঁদের পরিবারকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়।

কাজের সুস্থ পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে এই কর্মশালা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে রেল এবং মেট্রোর তরফে দাবি করা হলেও এ নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। রেল এবং মেট্রো, দু’ক্ষেত্রেই চালকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। কলকাতা মেট্রোর অবস্থা আরও করুণ। প্রায়ই চালকেরা আট ঘণ্টা কাজের পরে ১৬ ঘণ্টা বিশ্রাম পান না বলে অভিযোগ রেলের কর্মী সংগঠনগুলির। সম্প্রতি কাজের মাঝে বিরতির সময়ে রেলচালকেরা যাতে উন্নত পরিবেশ পান, সে জন্য শিয়ালদহে রানিং রুমের ব্যবস্থাপনা ভাল করা হয়েছে। কিন্তু কলকাতা মেট্রোর ক্ষেত্রে ওই ব্যবস্থাপনা তুলনামূলক ভাবে অপ্রতুল বলে অভিযোগ। পর্যাপ্ত সংখ্যায় মেট্রোচালক না থাকায় অনেককেই বেশি সময় কাজ করতে হয়। ফলে সেই সমস্যার সমাধান কী ভাবে হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে। লোকাল ট্রেনে বহু মহিলা চালকও রয়েছেন। তাঁদের সমস্যা কতটা গভীর ভাবে অনুধাবনের চেষ্টা হল এই কর্মশালায়— সেই প্রশ্নও উঠেছে।

Advertisement

রেল এবং মেট্রোর এই উদ্যোগকে কর্মী এবং আধিকারিকদের অনেকেই স্বাগত জানালেও অনেকের মনেই কাঁটা খচখচ করছে। ঠারেঠোরে তাঁরা বলতে চাইছেন, ‘আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন