—প্রতীকী ছবি।
কলকাতার ঐতিহ্যমণ্ডিত ভবন, বাড়ি প্রশাসনিক উদাসীনতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে— এই অভিযোগে বহু দিন ধরে সরব ঐতিহ্য বিশারদদের একাংশ। এ ব্যাপারে অতীতে কলকাতা পুরসভাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তাঁরা। এ বার কলকাতার ঐতিহ্য নষ্ট হওয়ার কথা শোনা গেল রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সদস্য, শিল্পপতি হর্ষবর্ধন নেওটিয়ার মুখে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ছিল ‘বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস’। সেই উপলক্ষে এ দিন নন্দনে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানেই হর্ষবর্ধন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘কলকাতা-সহ রাজ্যের বহু ঐতিহ্য ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বাকি যেটুকু রয়েছে, নষ্ট হওয়ার আগে অবিলম্বে সেগুলি সংরক্ষণ করা দরকার।’’ তবে কার বা কাদের গাফিলতিতে ঐতিহ্য নষ্ট হয়েছে, তার উল্লেখ করেননি তিনি।
ঐতিহ্য বিশারদদের একাংশের বক্তব্য, যে অনুষ্ঠানে হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ কমিশনের অন্য আধিকারিক, কলকাতা পুরসভার আধিকারিক, স্থপতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণে উৎসাহী উদ্যোগপতিরা বসে রয়েছেন, সেখানে হর্ষবর্ধনের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। আলাপন জানান, শুধুমাত্র সরকারি অর্থ খরচে ঐতিহ্য সংরক্ষণ সম্ভব নয়। যদি যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে ঐতিহ্য রক্ষা করতে হয়, তা হলে বেসরকারি উদ্যোগেরও প্রয়োজন রয়েছে।
কমিশনের চেয়ারম্যানের কথাকে সমর্থন করে এক ঐতিহ্য বিশারদ বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় কথা, ঐতিহ্যশালী ভবন, বাড়ির পাশাপাশি তাকে অর্থনৈতিক ভাবে বিপণনযোগ্যও করে তুলতে হবে। ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উদ্যোগপতিদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার একাধিক ছাড়, সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।’’
ঐতিহ্যকে আর্থিক দিক থেকে বিপণনযোগ্য করে তুলতে বিশেষ ‘ব্যবসায়িক মডেল’-এর প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করছেন অনেকে। যেখানে ঐতিহ্য সংরক্ষণের সঙ্গে আতিথেয়তা এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগ জড়িয়ে থাকবে। কী ভাবে রাজ্যের একাধিক পুরনো, ভগ্নদশার রাজবাড়িকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণ করে বর্তমানে সেখানে অভিজাত হোটেল-ব্যবসা শুরু হয়েছে, অর্থাৎ ঐতিহ্য রক্ষার সঙ্গে আতিথেয়তাকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক দিকটি একত্রিত করা হয়েছে, সে ব্যাপারেও উপস্থাপনা পেশ করা হয় ওই অনুষ্ঠানে।