এক দল নেশাগ্রস্তের দাপটে নাজেহাল পুলিশ থেকে পুর প্রশাসন, সকলেই। কারণ নেশার খরচ জোগাতে এরা কখনও ত্রিফলার বাতি, কোথাও রাস্তার জলকলের পাইপ, নির্মীয়মান সেতুর নিচে থাকা লোহার রড, কখনও বা বাতিস্তম্ভে পেঁচানো এলইডি-র চেন হাপিস করে দিচ্ছে। পুরসভার পক্ষ থেকে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে পুলিশের কাছে। তবুও কিছুতেই রোখা যাচ্ছে না তাদের।
এ বার ওই নেশাগ্রস্তদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কার্যত তাঁর নির্দেশে কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের স্বনিযুক্তি এবং স্বরোজগার দফতর হোমে রেখে ওই নেশাগ্রস্তদের চিকিৎসা করানোর কাজ শুরু করেছে। দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের কাছে জানতে পেরেছি প্রায় ২০০ নেশাগ্রস্ত এখন শহরের নানা জায়গায় চুরি করে যাচ্ছে। মূলত নেশার খরচ জোগাতে হাতের কাছে যা পায় তাই চুরি করে। অথচ তাদের অনেকেই দাগি চোর নয়।’’ তিনি জানান কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের দফতরে চিঠি দিয়ে ওই সব নেশাগ্রস্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর জন্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে স্বনিযুক্তি ও স্বরোজগার দফতর ৫০ লক্ষ টাকা কলকাতা পুলিশকে দিয়েছে বলে জানান দফতরের এক ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার।
সাধনবাবু জানান, এটাকে তাঁরা ‘শুদ্ধিকরণ’ বলেই মনে করছেন। প্রথম পর্যায়ে ১০০ জনকে বিভিন্ন হোমে রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। সেখানে তাঁদের থাকা-খাওয়া থেকে চিকিৎসা সবই করা হবে। ওই সময়ে যাতে তাঁদের ধারেকাছে কোনও নেশার দ্রব্য না পৌঁছয়, সেই দিকেও নজর থাকছে পুলিশের। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, প্রায় ১০ মাস ধরে তাঁদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া হবে। পুরোপুরি ভাবে নেশা ছেড়ে গেলে তাঁদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর সুযোগ করে দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘নেশামুক্ত হওয়ার পরে তাঁদের জীবিকার জন্য ব্যবস্থাও করা হবে। প্রশিক্ষণ দিয়ে আয় করার সুযোগ করে দেওয়া হবে। যাঁর যেমন যোগ্যতা তাঁকে তেমন ভাবেই কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হবে।