Road Accident

এক্সপ্রেসওয়েতে তিনটি লরির পর পর সংঘর্ষ, জখম খালাসি

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ প্রমোদনগর থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে একটি ডাম্পারের মুখ ঘোরাচ্ছিলেন চালক। সে সময়ে দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল একটি লরি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২১
Share:

অঘটন: তিনটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত লরির একটি থেকে বার করা হচ্ছে খালাসিকে। বুধবার, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে। —নিজস্ব চিত্র।

বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বিমানবন্দরমুখী লেনে পর পর তিনটি পণ্যবাহী লরির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল বুধবার ভোরে। এর জেরে বেশ কিছু ক্ষণ ওই রাস্তায় বন্ধ থাকে যান চলাচল। ঘটনায় আহত হয়েছেন একটি লরির এক জন খালাসি। পুলিশ জানিয়েছে, আহত খালাসির নাম সানি শেখ। বছর চব্বিশ-পঁচিশের ওই যুবকের বাড়ি নদিয়ার চাকদহ চৌমাথায়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ প্রমোদনগর থেকে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে একটি ডাম্পারের মুখ ঘোরাচ্ছিলেন চালক। সে সময়ে দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল একটি লরি। আচমকা কিছু দূরে ওই ডাম্পারটিকে দেখে ওই লরির চালক সজোরে ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যান। ফলে পিছনে আসা দু’টি লরি তাদের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে একে অন্যের পিছনে গিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে। এর জেরে দু’টি লরি পথ বিভাজিকার উপরে উঠে যায়। মাঝখানে থাকা লরিটির কেবিনে বসে থাকা সানির কোমর থেকে নীচের অংশ গাড়ির ভিতরেই আটকে যায়। এ দিকে লরির সংঘর্ষের বিকট শব্দে ততক্ষণে ছুটে এসেছেন আশপাশের লোকজন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে বেলঘরিয়া থানার পুলিশও। লরির মধ্যে আটকে পড়া খালাসিকে উদ্ধার করার কাজ শুরু হয়। দুর্ঘটনার প্রায় ৪০ মিনিট পরে শাবল, লোহার রড দিয়ে লরির কেবিনের দুমড়ে যাওয়া অংশ ফাঁক করে জখম সানিকে বার করে আনা হয়। এর পরে দ্রুত তাঁকে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সানির পায়ে ও কোমরে আঘাত রয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল।

এই ঘটনার জেরে বন্ধ করে দিতে হয় বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দরমুখী লেনটি। ফলে তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে। খালাসিকে উদ্ধারের পরে, যানজট কাটাতে বেশ কিছু ক্ষণ দক্ষিণেশ্বরগামী লেন দিয়েই উভয় দিকের গাড়ি চলাচল করানো হয়। এর পরে লরি সরিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক সময় লেগে যায়।

Advertisement

এ দিন ওই পথেই এক আত্মীয়কে বিমানবন্দর থেকে আনতে যাচ্ছিলেন তমাল রায়। তিনি জানান, দুর্ঘটনার জেরে প্রমোদনগরের কাছে এসে তাঁর গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। বেশ
কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে পুলিশ যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরু করে। ফলে বিমানবন্দরে পৌঁছতে তাঁর অনেক বেশি সময় লেগে যায়। দুর্ঘটনাগ্রস্ত একটি লরির চালক প্রদীপ সরকার জানান, তিনি লরি নিয়ে দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। আচমকা ডাম্পারটি এক্সপ্রেসওয়ের উপরে ঘুরতে যায়। সে সময়ে আচমকা ব্রেক না কষলে ওই ডাম্পারে গিয়ে ধাক্কা লাগত। তাই তিনি ব্রেক কষেন। এর পরেই পিছনের লরিটি তাঁর লরির পিছনে এসে ধাক্কা মারে। সেই লরির পিছনে ধাক্কা মারে আরও একটি লরি। তিনটি লরিরই কম-বেশি ক্ষতি হয়েছে, তবে মাঝখানে থাকা লরির সামনের অংশের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে।

স্থানীয়দের একাংশের কথায়, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে রাস্তার কাজ হচ্ছে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে এই এক্সপ্রেসওয়ে সংযুক্ত হওয়ার কাজও চলছে। ফলে এই রাস্তায় ডাম্পার, ট্রেলারের চাপ বেড়েছে। চালকেরা যখন আশপাশের রাস্তা থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে উঠছেন বা গাড়ি ঘোরাচ্ছেন, সে সময়ে পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক নজরদারি না থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে। কারণ এই এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে তীব্র বেগে যান চলাচল করে থাকে।
তাই ওই রাস্তায় ট্র্যাফিক নজরদারি আরও বাড়ানোর দাবি করেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ইতিমধ্যেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন