তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, ট্যাংরায় বোমা-গুলি

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও থামছে না তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এ বার খাস কলকাতার বুকে থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে চলল বোমা-গুলি। এমনকী রক্তাক্ত হল পুলিশও। এই ঘটনার ফলে উত্তেজনা ছড়াল ট্যাংরার বৈশালী মোড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৫ ১৭:২২
Share:

এ ছবিই দেখা গেল ট্যাংরায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও থামছে না তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এ বার খাস কলকাতার বুকে থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে চলল বোমা-গুলি। এমনকী রক্তাক্ত হল পুলিশও। এই ঘটনার ফলে উত্তেজনা ছড়াল ট্যাংরার বৈশালী মোড়ে। মঙ্গলবার দুপুরে বোমাবাজি-গুলিবর্ষণ-মারধরের ফলে সন্ত্রস্ত হলেন এলাকাবাসীরা। শাসক দলেরই দুই গোষ্ঠীর এই লড়াইয়ের মাঝে পড়ে আহত হলেন ট্যাংরা থানারই এক সাব-ইন্সপেক্টর। তবে এই ঘটনার দায় নিতে চাননি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

স্থানীয়দের দাবি, শাসক দলেরই দুই গোষ্ঠী প্রদীপ গুহ ও মনোজ হাজরার দলবলের সঙ্গে ঝামেলা বাধে এলাকারই অলোক খাটুয়ার লোকেদের। ঠিক কী হয়েছিল এ দিন? ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে ১১টা নাগাদ। বৈশালীরই একটি মন্দিরে তখন পুজোপাট চলছিল। ভিড়ের মধ্যে মন্দিরের সামনে জড়ো হয়েছিলেন প্রদীপ গুহ, মনোজ হাজরা-সহ তাদের দলবল। সে সময় হঠাৎই সেখানে এসে হাজির হয় অলোক খাটুয়া। অভিযোগ, মনোজকে বেধড়ক মারধর করে অলোক। এর পর এ দিন সকালেই থানায় অভিযোগ করে প্রদীপ-মনোজের দলবল। সে সময় সেকানে এসে হাজির হয় অলোক খাটুয়ার লোকজন। দু’পক্ষের বাদানুবাদ পরিণতি পায় বোমাবাজিতে। চলে অবিরাম গুলিবর্ষণও। ঘটনাস্থল থেকে কয়েক হাত দূরেই ট্যাংরা থানা। কিন্তু, বোমাবাজি থামানোর পরিবর্তে কার্যত দর্শকের ভূমিকা নেয় পুলিশ। বোমাবাজির মধ্যেই চলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়াও। এমনকী, পুলিশকে মারের হুমকিও দেওয়া হয়। যুযুধান দুই দলের মাঝে পড়ে মাথা ফেটেছে ট্যাংরা থানার এক এক সাব-ইন্সপেক্টরের। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনায় ট্যাংরা থানার তিন কর্মী-আধিকারিক আহত হয়েছেন। এ দিন চার রাউন্ড গুলি চলেছে। দু’পক্ষেরই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রোমোটারদের থেকে তোলাবাজি-সহ এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে দু’দলের মধ্যে প্রায়শই ঝামেলা লেগে থাকত। এ দিন শুধু তা বড় আকার নিয়েছে। তবে এই ঘটনায় শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

স্থানীয় কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার বলেন, “এখানে একটা গণ্ডগোল হয়েছে ঠিকই। কাদের সঙ্গে কোন দুষ্কৃতীর ঝামেলা হবে তাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব টানা ঠিক নয়।” তবে এ নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যে তিনি কথা বলেছেন তা-ও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।

ঘটনার পরই শাসক দলকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা তিব্রেবাল সরাসরি বলেন, “এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে এটি আসলে তৃণমূলেরই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এতে সাধারণ মানুষেরই ক্ষতি হয়।”


—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন