ভর্তি ঘিরে জয়পুরিয়ায় কাজিয়া টিএমসিপি-র

কলেজে ভর্তির মরসুমে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের গোষ্ঠী-কোন্দল যে বহু ক্ষেত্রেই গোলমালের কারণ হয়ে উঠছে, বৃহস্পতিবার ফের তার প্রমাণ মিলল জয়পুরিয়া কলেজে। প্রাক্তন ছাত্রনেতাদের একটি গোষ্ঠী ভর্তিতে নাক গলাতে আসায় সেখানকার বর্তমান গোষ্ঠী বাধা দেয়। পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৫ ০৪:১৫
Share:

কলেজে ভর্তির মরসুমে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের গোষ্ঠী-কোন্দল যে বহু ক্ষেত্রেই গোলমালের কারণ হয়ে উঠছে, বৃহস্পতিবার ফের তার প্রমাণ মিলল জয়পুরিয়া কলেজে। প্রাক্তন ছাত্রনেতাদের একটি গোষ্ঠী ভর্তিতে নাক গলাতে আসায় সেখানকার বর্তমান গোষ্ঠী বাধা দেয়। পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠেছে। ওই ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে। কলেজ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ছাত্রটি তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই সদস্য।

Advertisement

এ দিন দুপুরে ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ধীরাজ সোনকারের অনুগামী এক দল পড়ুয়া ছাত্র ভর্তির প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে যান বলে অভিযোগ। ওই দলের নেতৃত্বে দিচ্ছিলেন কিসান সোনকার নামে কলেজের এক ক্লাস-প্রতিনিধি। কিন্তু ছাত্র সংসদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাসের অনুগামীরা তাঁদের বাধা দেন। কলেজের সাধারণ পড়ুয়ারা জানান, বিবদমান দু’টি দলই আদতে টিএমসিপি-র সমর্থক।

কলকাতা-সহ রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই কলেজে ছাত্র ভর্তিকে কেন্দ্র করে টিএমসিপি-র দাদাগিরি চলেছে বলে শিক্ষক-ছাত্রদের বড় অংশের অভিযোগ। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও কলেজে ছাত্র ভর্তিকে ঘিরে গোলমাল চলেছে। চলছে টাকার খেলাও। অভিযোগ, জয়পুরিয়া কলেজেও তার নমুনা মিলেছে। অধ্যক্ষ অশোক মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘ভর্তিকে ঘিরে কিছু হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে আমার সামনেই এক ছাত্রীকে হেনস্থা করা হয়েছে। কলেজে পরীক্ষা চলছিল। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুর, বিশৃঙ্খলায় বারে বারেই জড়িয়ে যাচ্ছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের নাম। সম্প্রতি পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র এক দল সমর্থক ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত শিক্ষকদের মারধর, হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-রই অন্যতম নেতার বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই হামলার সময় সংগঠনের রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র নিজেও হাজির ছিলেন।

এ দিন অবশ্য অশোকবাবু স্বীকার করে নেন, ছাত্র ভর্তিকে ঘিরে কিছু কিছু বাইরের হস্তক্ষেপ ঘটছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনও অনিয়ম বরদাস্ত করব না। জয়পুরিয়ায় বাইরের ঘটনা বারবার কলেজের ভিতরে চলে আসছে। এটা বন্ধের জন্য আইন আইনের পথেই চলবে।’’ টিএমসিপি-র সাধারণ সম্পাদক তমোঘ্ন ঘোষ কিন্তু কিছুই বলতে চাননি। যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পারিবারিক কাজে ব্যস্ত আছি। কিছু বলতে পারব না।’’

যাঁরা ভর্তি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে এসেছিলেন, তাঁরাও যে টিএমসিপি-র সমর্থক, সেটা স্বীকার করেছেন জয়পুরিয়ার ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাস। তিনি বলেন, ‘‘কলেজে ছিলাম না। কলেজের পরিচালন সমিতি ১৫ সদস্যের কমিটি গড়েছে ভর্তি পরিচালনার জন্য। তাতে অন্যেরা হস্তক্ষেপ করতে আসায় এক ছাত্রী বাধা দেন বলে শুনেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement