গাড়ি পরীক্ষায় ফরেন্সিক দল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
আতঙ্ক এখনও কাটেনি। তাই পুলিশের তদন্তের গতিও শ্লথ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় আহত অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের আতঙ্ক না কাটা পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ নিয়ে কথা বললে মানসিক চাপ বাড়বে। তাঁর অবস্থার একটু উন্নতি হয়েছে। শনিবার ঘুমিয়েছেন ও রবিবার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। মেরুদণ্ডে ও ঘাড়ে চোট পেয়েছেন তিনি। জিভে আঘাত থাকায় তাঁকে স্যুপ, ফলের রস দেওয়া হচ্ছে।
এ দিকে বিক্রমের সঙ্গে কথা না বললে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত সব ধোঁয়াশা কাটবে না বলেই জানাচ্ছে লালবাজার। তবে রবিবার ফরেন্সিক দল গাড়ি ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
আরও পড়ুন: গতিই আমাকে সবচেয়ে বেশি টানে, বলেছিলেন সনিকা
শনিবার ভোরে দ্রুত গতিতে চলা গাড়িটি লেক মার্কেটের সামনে ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। মৃত্যু হয় মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের। আহত হন বিক্রম। তিনি অবশ্য পুলিশকে জানান, গাড়ির গতি বেপরোয়া ছিল না।
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘বিক্রম সুস্থ না হলে তদন্ত এগোনো কঠিন। চিকিৎসকের পরামর্শ, দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে বিক্রমের সঙ্গে কথা বলা যাবে না। তবে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে গাড়ির কথা বিক্রম জানিয়েছেন, সেটির নম্বর খুঁজতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়েও দেখা হচ্ছে।’’ এ দিন বিক্রমের পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সোনিকার মৃত্যুর খবর বিক্রমকে জানানো হয়নি। বিক্রমের বাবা বিজয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক বার চোখ খুলে জিজ্ঞাসা করেছে সোনিকা কি এখানেই ভর্তি আছে, ওর অবস্থা কেমন?’’
আরও পড়ুন: ফের গতিই কাল হল? গাড়ির এয়ারব্যাগ না খোলা নিয়েও প্রশ্ন
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানান, গাড়ির দরজা খুলে সোনিকা ও বিক্রমকে বাইরে আনা হয়েছিল। কিন্তু গাড়িটিতে পাঁচটি এয়ার ব্যাগ থাকা সত্ত্বেও কেন একটিও খোলেনি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিক্রমের পরিবার। তাঁদের আঙুল গাড়ি কোম্পানির দিকেই। যদিও বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, এয়ার ব্যাগ খোলার শর্ত রয়েছে। গাড়ি কী ভাবে ধাক্কা লাগছে বা সিট বেল্ট বাঁধা আছে কি না, তার উপরে নির্ভর করে এয়ার ব্যাগের কার্যকারিতা। বিজয়বাবু বলেন, ‘‘ছেলে একটু সুস্থ হলে গাড়ি সংস্থার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করব। এয়ার ব্যাগ কাজ করলে হয়তো একটা মেয়ের প্রাণ বেঁচে যেত। ছেলেও এতটা জখম হতো না।’’ তবে যে কোম্পানির গাড়ি বিক্রম চালাচ্ছিলেন সেই কোম্পানি এ বিষয়ে কিছুই বলতে চায়নি।