Kolkata Hawker

উৎসবের মরসুমে স্থগিত হয়ে গেল হকারদের পরিচয়পত্র বিলি, সময় নিয়ে সমীক্ষা করে পরিচয়পত্র দিতে চায় কলকাতা পুরসভা

কলকাতা পুরসভার তরফে খবর, শহরে বৈধ ভাবে হকারি করছেন এমন সাড়ে আট হাজার হকারকে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ১৯:০৬
Share:

নিউ মার্কেট চত্বরে বিভিন্ন জিনিসের পসরা নিয়ে হকারেরা। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

উৎসবের মরসুমে কলকাতার হকারদের পরিচয়পত্র বিলি করার প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। প্রথমে নির্ধারিত ছিল, অগস্ট মাস থেকেই শহরে হকারদের হাতে ডিজিটাল পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে টাউন ভেন্ডিং কমিটির একাংশের আপত্তির জেরে সেই কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছিল। উৎসবের মরসুম পর্যন্ত এই পরিচয়পত্র বিলি না-করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, এমনটাই পুরসভা সূত্রে খবর।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার তরফে খবর, শহরে বৈধ ভাবে হকারি করছেন, এমন সাড়ে আট হাজার হকারকে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কয়েক মাস আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সমীক্ষায় চিহ্নিত ১৪ হাজার হকারের মধ্যে থেকে নিয়ম মেনে চলা ৮,৭২৭ জনকে প্রথম ধাপে কার্ড দেওয়া হবে। হাতে থাকবে ডিজিটাল পরিচয়পত্র, প্রতিটিতে থাকবে বিশেষ কিউআর কোড। ওই কোড স্ক্যান করলেই সংশ্লিষ্ট হকারের যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে। এর ফলে অবৈধ ভাবে স্টল বিক্রি বা জায়গা ভাড়া দেওয়ার মতো অভিযোগ এলে সহজেই দোষীকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। ২০১৫ সালের তালিকাকে ভিত্তি করে এক বছর আগে ডিজিটাল অ্যাপের মাধ্যমে এই সমীক্ষা শুরু হয়। নথিভুক্ত হন ৫৪,১৭৮ জন হকার। কিন্তু হকার সংগঠনের একাংশের দাবি, সেই সমীক্ষা যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য নয়। বহু পুরনো বৈধ হকার বাদ পড়েছেন তালিকা থেকে। ফলে কেবলমাত্র ৮,৭২৭ জনকে পরিচয়পত্র বিলি করলে বাকি হাজার হাজার হকার বিক্ষোভে নামবেন বলেই তাঁদের আশঙ্কা।

এক হকার নেতা বলেন, “শুধু আট হাজার জনকে পরিচয়পত্র দিলে চলবে না। ২০১৫ সালের তালিকায় নাম থাকা সব হকারকে একসঙ্গে কার্ড দিতে হবে। তারপর যাঁরা বাদ পড়েছেন, ফের সমীক্ষার মাধ্যমে তাঁদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”

Advertisement

এমনকি পুরসভারই একাংশ স্বীকার করছে, এই সংখ্যাটাই শেষ নয়। এক আধিকারিক বলেন, “শহরে কমবেশি আড়াই লক্ষ হকার আছেন। তাই ধাপে ধাপে সমীক্ষা ছাড়া উপায় নেই। আপাতত এই আট হাজারকে দেওয়া হবে, পরে ফের অ্যাপের মাধ্যমে নাম নথিভুক্ত হবে।”

হাতিবাগান, গড়িয়া ও নিউ মার্কেট চত্বরের বহু হকারকে প্রথম ধাপে কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু উৎসবের আগে অশান্তি এড়াতেই আপাতত পুরো প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, দুর্গাপুজো ও দীপাবলির মরসুম কেটে গেলে আবার এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হতে পারে।

হকারদের পরিচয়পত্র নিয়ে এই জটিলতা নতুন নয়। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের পর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহরের ফুটপাত দখল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর নির্দেশে নতুন করে সমীক্ষা শুরু হয়। সেই সমীক্ষার ফলেই এ বার ডিজিটাল পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাউন ভেন্ডিং কমিটির ভিতরেই মতভেদ থাকায় আপাতত গোটা প্রক্রিয়া থমকে গেল। উৎসব শেষ হলে পুরসভার পদক্ষেপের দিকেই এখন তাকিয়ে আছে কলকাতার হকারসমাজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement