ফের প্রতারিত বিদেশি গ্রাহক, গ্রেফতার সল্টলেক সংস্থার কর্মী

বিদেশি গ্রাহকদের ভুল তথ্য দিয়ে বা কখনও প্রযুক্তিগত পরিষেবা দিয়ে সর্বস্বান্ত করার ঘটনা ঘটেই চলেছে শহরে। ফের আমেরিকার গ্রাহকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাঁদের ব্যাঙ্ক এবং ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত তথ্য জেনে নিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার হাতানোর ঘটনা ঘটল। অভিযোগের তদন্তে নেমে সোমবার রাতে দক্ষিণ কলকাতা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল সল্টলেক সাইবার থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ১৯:১৭
Share:

বিদেশি গ্রাহকদের ভুল তথ্য দিয়ে বা কখনও প্রযুক্তিগত পরিষেবা দিয়ে সর্বস্বান্ত করার ঘটনা ঘটেই চলেছে শহরে। ফের আমেরিকার গ্রাহকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাঁদের ব্যাঙ্ক এবং ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত তথ্য জেনে নিয়ে প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার হাতানোর ঘটনা ঘটল। অভিযোগের তদন্তে নেমে সোমবার রাতে দক্ষিণ কলকাতা থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল সল্টলেক সাইবার থানার পুলিশ। ধৃতের নাম অখিলেশ শ (৩১)। ধৃতের বিরুদ্ধে প্রতারণা, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিধাননগর আদালতে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই মার্কিন সংস্থা আমেরিকা-সহ ইংল্যন্ড ও অষ্ট্রেলিয়াতে তথ্যপ্রযুক্তিগত পরিষেবা দিত। সেই কাজ করার জন্য আমেরিকার ওই সংস্থা চুক্তি করে সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরের একটি সংস্থার সঙ্গে। আমেরিকার ওই সংস্থার হয়ে তিন দেশের গ্রাহকদের পরিষেবা দিত সল্টলেকের ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। চলতি বছরের মার্চ মাসে আমেরিকার ওই সংস্থার একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করেন, কিছু ব্যক্তি প্রযুক্তিগত পরিষেবার দেওয়ার নাম করে ফোন করছে। ফোনে সেই সব ব্যক্তি গ্রাহকদের জানিয়েছে যে, ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই গ্রাহকরা পরিষেবার জন্য যে পরিমাণ সারচার্জ দিয়েছেন, তা ফেরত দেওয়া হবে। টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে সেই সব গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য জেনে নেন সেই সব ব্যক্তিরা। তার পরে দেখা যায় একাধিক গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমেরিকার সংস্থাটি অভিযোগের কথা জানায় পাঁচ নম্বর সেক্টরের সংস্থাটিকে। তাঁরা বিধাননগর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

আরও পড়ুন

Advertisement

যাত্রী ধরার টক্করে ট্যাক্সির জুলুম-রাজ

তদন্তে নামে সাইবার থানার অফিসাররা। বিদেশি গ্রাহকদের টাকা এ দেশে কোথায় এসে পৌঁছল, সেই সূত্র ধরেই ধৃত অখিলেশের নাম উঠে আসে তদন্তে। পাঁচ নম্বর সেক্টরের ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাতেই কর্মরত সে। পুলিশের দাবি, সেই সুবাদে বিদেশি গ্রাহকদের তথ্য জেনে তা কাজে লাগিয়ে টাকা হাতানোর কাজ করছিল অখিলেশ। গত কাল সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতা থেকে অখিলেশকে প্রথমে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে অখিলেশের বক্তব্যে অসঙ্গতি মেলায় তাকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেন তদন্তকারীরা।

তবে বিধাননগরের গোয়েন্দাপ্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানান, তদন্তে ধৃত অখিলেশের নাম মিলেছে। তবে এই অপরাধের পিছনে একটি চক্র কাজ করছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। সেই কারণে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে চাওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

একের পরে এক বিদেশি গ্রাহকদের তথ্য এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতানোর ঘটনায় নাম জড়িয়ে যাচ্ছে রাজ্যের গর্ব পাঁচ নম্বর সেক্টরের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকের। এমন ঘটনা বন্ধ করতে না পারলে, গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষিত না রাখতে পারলে আন্তর্জাতিক বাজারে এই শিল্পতালুকের সুনাম নষ্ট হবে বলেই মনে করছেন আইটি কর্মীরা।

রাজ্যের সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে। এ ভাবে চলতে থাকলে বিশ্ববাজারে আমাদের তথ্য প্রযুক্তি শিল্পতালুক সম্পর্কে খারাপ প্রভাব পড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন