সেই মেশিন। — নিজস্ব চিত্র
দাবি ছিল বহু দিনের। আন্দোলনও নতুন নয়। পূরণ হল সম্প্রতি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাঁচটি স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসালেন কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনের সময়ে যা থেকে দশ টাকার বিনিময়ে ন্যাপকিন নিতে পারবেন পড়ুয়ারা। এটাই অবশ্য প্রথম নয়। মাস কয়েক আগে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুলে এই যন্ত্র বসিয়ে নজির গড়েছিলেন স্কুলেরই শিক্ষক চন্দন মাইতি। এই যন্ত্র রয়েছে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে, খড়্গপুর আইআইটি এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও। সেই তালিকায় এ বার নাম লেখাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও।
মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক শ্রমণ গুহ জানান, কয়েক সপ্তাহ আগেই যন্ত্রগুলি বসেছে। গত বছরই কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল ছাত্র সংসদের তরফে। এত দিনে তা বাস্তবায়িত হল। তিনি বলেন, ‘‘দাবি মেনে নেওয়ায় আমরা খুশি। তবে ইউজি আর্টসের ভবনেও একটা যন্ত্র দরকার, সেটা বসেনি এখনও।’’
খুশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। অর্থনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সম্পিতা নিয়োগী বললেন, ‘‘এটা খুব দরকার ছিল। সমস্ত প্রতিষ্ঠানেই এই যন্ত্র জরুরি। আমরা, যাদবপুরের পড়ুয়ারা তো নিজেদের খোলা মনের বলে গর্ব করি। সেই গর্ব সার্থক হয় এ রকম পদক্ষেপে।’’ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পড়ুয়া পায়েল সরকার জানালেন, একটা যন্ত্র ও তার প্রয়োজনীয়তা এ ক্ষেত্রে যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্গ-বৈষম্যের প্রতিবাদ। ‘‘আমরা সব সময়ই একটি বৈষম্য-মুক্ত সমাজ চেয়েছি। সেই সমাজে যাদবপুরের এই উদ্যোগ একটা দৃষ্টান্ত হল,’’ বলছেন পায়েল।
পড়ুয়াদের দাবির পাশাপাশি এই উদ্যোগে ভূমিকা রয়েছে রাজ্য মহিলা কমিশনেরও। কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় জানালেন, গত বছর নভেম্বর মাসে প্রথম কমিশন ভবনে এই যন্ত্র বসানো হয়। ‘‘তার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই যন্ত্রের প্রস্তাব দিই আমরা।’’— বললেন সুনন্দাদেবী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিন অব স্টুডেন্টস’ রজত রায় জানান, পড়ুয়াদের দাবি মেনে যন্ত্রের ব্যবস্থা করে হয়েছে। আর একটা যন্ত্রের দাবিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।