তিনমূর্তি: (বাঁ দিক থেকে) ফিরদৌস, ইমন ও ফারুক।
তিন বাংলাদেশি বন্দি পালানোর পরেই আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের তিন ওয়ার্ডারকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পলাতকদের খোঁজ নেই। তবে সোমবার বদলি করা হয়েছে ওই জেলের সুপার এবং এক জেলারকে। আলিপুর জেলের সুপার সৌমিক সরকারকে মেদিনীপুর জেলে বদলি করা হয়েছে। তাঁর জায়গায় সুপারের দায়িত্ব পালন করবেন ওখানকার ডিআইজি বিপ্লব দাস। জেলার শিবাজী রায় বদলি হলেন বাঁকুড়ার জেলে। তাঁর জায়গায় এলেন বাঁকুড়ার জেলার জয়ন্ত চক্রবর্তী।
রবিবার, বন্দি পালানোর দিনেই সাসপেন্ড করা হয় ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তিন ওয়ার্ডারকে। বন্দি উধাওয়ের ঘটনাকে মাথায় রেখে রাজ্যের কারা দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যের সব জেলে বন্দিদের সেলে যখন-তখন তল্লাশি চালাতে হবে। কোনও দড়ি, চাদর বা ধারালো জিনিস (যা দিয়ে পালানোর ছক কষা যায়) আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। রক্ষী বা অন্য কারাকর্মীদের সঙ্গে বন্দিদের আঁতাঁত ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
এত বদলি, এত নির্দেশিকা জারির পরেও রবিবার কাকভোরে পালিয়ে যাওয়া তিন বন্দির কাউকে এখনও পর্যন্ত ধরতে পারা যায়নি। প্রায় ১৫ ফুচ উঁচু পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায় তিন বাংলাদেশি বন্দি মহম্মদ ফারুক হাওলাদার ওরফে ফারুক, ইমন চৌধুরী ওরফে রণয় রায় এবং ফিরদৌস শেখ ওরফে রানা। বাড়ি থেকে আসা মোয়া রক্ষী ও সহবন্দিদের খাইয়েছিল তারা। কারা দফতরের অনুমান, ওই মোয়ার ভিতরে মাদক জাতীয় কিছু মেশানো হয়েছিল এবং তার প্রতিক্রিয়াতেই ঘুমে ডুবে যান রক্ষী ও সহবন্দিরা। আর সেই সুযোগেই গরাদ কেটে এবং পাঁচিল টপকে পালিয়েছে তিন জন। তাদের মধ্যে ফারুক ২০১৩ সালে অস্ত্র আইন ও ডাকাতির মামলা, ফিরদৌস ২০১৪ সালে অপহরণের মামলা এবং বিদেশি অনুপ্রবেশ আইন ও ডাকাতির মামলার আসামি ছিল।
গত বছরের শেষে হুগলির জেলা সংশোধনাগার থেকে প্রণয় ভাবুক নামে এক আসামি পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়। এক দিন পরে কুলতলি থেকে পুলিশ তাকে ধরে আনলেও শেখ ফিরোজ নামে ওই জেলের যে-বন্দি আদালত থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।